১২ দিন আগে ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। শুরুতে তালেবানের নেতারা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বললেও বাস্তবে তার দেখা মিলছে না।
রাজধানী কাবুলসহ অন্যান্য অঞ্চলে তালেবানের হাতে সাংবাদিকদের নির্যাতনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টোলোনিউজের সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান সর্বশেষ তালেবানের নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে দেশটির অর্থনীতির দশা কী, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরিতে বুধবার সকালে কাবুলে কর্মস্থল টোলোনিউজের কার্যালয় থেকে ক্যামেরাম্যানকে সঙ্গে নিয়ে বের হন সাংবাদিক জিয়ার খান ইয়াদ।
গন্তব্য হাজি ইয়াকুব মসজিদ। সেখানে প্রতিদিন দিনমজুররা ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য কায়িক পরিশ্রমের কাজের সন্ধানে জড়ো হন।
মসজিদ প্রাঙ্গণে পৌঁছে ইয়াদ অপেক্ষারত দিনমজুরদের সাক্ষাৎকার নেয়া শুরু করেন। হঠাৎ সাদা রঙের একটি ল্যান্ড ক্রুজার মসজিদের সামনে থামে।
গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে নিজেদের তালেবানের সদস্য পরিচয় দিয়ে ইয়াদ ও ক্যামেরাম্যানের ফোন, ক্যামেরা, মাইক্রোফোনসহ অন্যান্য যন্ত্র কেড়ে নেয়। এরপর ওই সংবাদকর্মীদের বেদম পেটানো শুরু হয়।
নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি ইয়াদ ও তার সহকর্মী।
সংবাদকর্মীদের শারীরিক নির্যাতন শেষে দ্রুতই ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায় তালেবান সদস্যরা।
শুধু ইয়াদ নন, দেশটিতে কর্মরত সাংবাদিকরা অহরহই এমন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন।
গত সপ্তাহে জার্মানিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, আফগানিস্তানে নিজেদের এক সাংবাদিকের ঘরে হানা দেয় তালেবান। ওই সাংবাদিককে না পেয়ে তার এক স্বজনকে হত্যা করে সংগঠনটির যোদ্ধারা।
এ ছাড়া ১৯ আগস্ট আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে বিক্ষোভ চলাকালে সংবাদ সংগ্রহের সময় আরও দুই সাংবাদিক তালেবানের নির্যাতনের শিকার হন।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা সংবাদকর্মীদের ওপর তালেবানের নির্যাতনের খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে গঠিত সংস্থা সিপিজে এশিয়ার সমন্বয়ক স্টিভেন বাটলার বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমকে মুক্তভাবে কাজ করতে দেয়ার অঙ্গীকার তালেবানকে রক্ষা করতে হবে।
‘আফগানিস্তানের সাংবাদিকদের ওপর তালেবান যোদ্ধাদের আক্রমণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’