কাবুল থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে পত্তিকা গ্রামের সন্তান হাকিম খান। সেখানেই বড় হয়ে ওঠা। বাবা-মা স্বজনরাও রয়েছেন সেখানে। তবু তালেবানের দখলে চলে যাওয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ঠিক হলেও পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে যেতে চান না হাকিম।
১০ বছর আগে ব্যবসা করতে ভারতে এসেছিলেন হাকিম খান। তারপর ব্যবসা জমে গেলে ৫ বছর আগে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বর্ধমান জেলার পানাগড়ের পাঠানপাড়ায় বসবাস শুরু করেন হাকিম। তারপর আর দেশে ফেরেননি।
তার মাতৃভূমিতে ফিরে না যাওয়া নিয়ে হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘প্রার্থনা করি, আফগানিস্তানে শান্তি ফিরে আসুক। যেমন শান্তি রয়েছে এই বাংলায়। তবে, ওখানকার পরিস্থিতি ঠিক হলেও আমি আর ফিরব না। এখানেই থাকব। এখানেই শান্তি রয়েছে।’
হাকিমের ছেলেময়েরা এখানকার স্কুলে পড়ে। দীর্ঘদিন থাকার ফলে পরিবারের সবাই বাংলা ভাষাটাও ভালোমতো শিখে নিয়েছেন। পাঠানপাড়ার বাঙালিরাও হাকিম খানের পরিবারকে আপন করে নিয়েছেন। তাই এই শান্তি, ভালোবাসা ছেড়ে মাতৃভূমির অশান্তির মধ্যে আর ফিরে যেতে চান না হাকিম খান।
তার কথায়, ‘আমার ছেলেমেয়েরা এখানকার স্কুলে পড়ে। ওখানে স্কুল-কলেজ কিচ্ছু নেই। আফগানিস্তানে ফিরলে ওদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে।’
তালেবান আফগানিস্তান দখল করে নেয়ার পর থেকে চিন্তিত হাকিম খান। সেখানে বাবা-মা রয়েছেন। তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
হাকিম বলেন, ‘ওখানে ফোনের সব নেটওয়ার্ক উড়ে গিয়েছে। গত কয়েক দিন বাবা-মার সঙ্গে কথা হয়নি। ওদের জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে। ওখানে চারদিকে শুধু আতঙ্ক আর আতঙ্ক। বিমানবন্দরে কী হচ্ছে, সেটা সবাই দেখছে। তাই একটাই প্রার্থনা, হিন্দুস্তানের মতো আফগানিস্তানেও যেন শান্তি ফিরে আসে।’
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসে তালেবান। এরপর থেকে দেশ ছেড়েছেন ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। যার অধিকাংশাই আফগান নাগরিক।