তালেবানের হাতে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হলে পরদিনই হাজার হাজার মানুষ শহরটির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিড় করেন।
তালেবানের ভয়ে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার চিন্তায় এসব মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছেন।
এত মানুষ একসঙ্গে আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়ায় কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৃষ্টি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। এমনকি হতাহতের ঘটনাও বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকায় ঘটে।
চলতি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে নিজেদের নাগরিক ও সেনা প্রত্যাহারের যে ঘোষণা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেই সময়সীমা বাড়াতে নারাজ তালেবান।
কাবুল বিমানবন্দরে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সেনাদের নিরাপদে মানুষজনকে দেশত্যাগে সহযোগিতার প্রাণপণ চেষ্টার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে নারী ও শিশুদের ব্যারিকেডের ওপার থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে রাখার ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুললেই চোখে পড়ছে।
ওই সব ছবির মধ্যে কাবুল বিমানবন্দরে শিশু হাতে এক সেনার ছবিও দেখা যাচ্ছে। ছবির শিরোনামে বলা হয়, আফগান এক শিশুকে উদ্ধার করছে যুক্তরাষ্ট্রের এক সেনা।
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী অনেকেই ছবিটি পোস্ট করে শিরোনামে লিখেছেন, ‘আফগানিস্তানে শিশুদের উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা’।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেইক নিউজ ওয়্যার রুম (এএফডব্লিউএ) ছবিটির দাবি যাচাই-বাছাই করে।
এএফডব্লিউএ জানতে পারে, ভাইরাল হওয়া ওই ছবির ব্যক্তি প্যারাশুট রেজিমেন্টের এক ব্রিটিশ করপোরাল।
স্কাই নিউজ তাদের এক নিবন্ধে ওই ছবি ব্যবহার করে।
নিবন্ধটির শিরোনাম হচ্ছে, ‘আফগানিস্তান: কাবুল বিমানবন্দরে ব্রিটিশ সেনাদের অক্লান্ত উদ্ধারচেষ্টা’।
স্কাই নিউজই শিশু হাতে ওই ব্রিটিশ সেনার ছবি তোলে।
ব্রিটিশ ওই করপোরালের সঙ্গে পরে স্কাই নিউজ সাক্ষাৎ করে। তিনি পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘কাবুল বিমানবন্দরে শিশুটি কাঁটাতারের অপর প্রান্তে নিজের মতো করে হাঁটছিল। পেছনে তার মা ছিলেন।’
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের সেনারা আফগান নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দরে মানবেতর পরিবেশ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ছবিটি তোলা হচ্ছে, তা ওই ব্রিটিশ সেনা জানতেন না।
ওই ব্রিটিশ সেনা জানান, অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে কাবুল বিমানবন্দরে তিনি তার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ওই শিশু ও তার মা নিরাপদে দেশের বাইরে পৌঁছে নতুন জীবন শুরু করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।