ভারতের ত্রিপুরায় বিজেপি নেতাদের তৃণমূলের ওপর তালেবানি আক্রমণ ও হাড়গোড় ভেঙে দেয়ার হুমকির কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল কংগ্রেসের ভূয়সী প্রশংসা করলেন ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএম নেতা মানিক সরকার।
বর্ষীয়ান বাম নেতা মানিক সরকার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘হাত-মুখ ভেঙে দেবেন এই মন্তব্য, হুমকির মধ্যেও যারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন, তাদের আমি কুর্নিশ জানাই। সাহস আছে, মাথানত করছেন না। আর যিনি হুমকি দিচ্ছেন, সেটা তার দুর্বলতা। ভয় পেয়ে যাচ্ছেন। জনবিচ্ছিন্নতায় ভুগছেন বলে এমন মন্তব্য।’
সম্প্রতি অসমের বিজেপি নেতা অরুণ ভৌমিক হুঁশিয়ারি দেন, তৃণমূল নেতারা আগরতলা বিমানবন্দরে নামলেই যেন তাদের ওপর তালেবানি কায়দায় হামলা চালায় বিজেপি সমর্থকরা।
অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক ও ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার বিশ্ববন্ধু সেন সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে হাড়গোড় ভেঙে দেয়ার নিদান দেন।
ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বিজেপি নেতাদের এই আচরণের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূলের পাশে দাঁড়ান।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে বিপুল আসনে জয় পেয়ে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তৃণমূলের প্রথম টার্গেট ত্রিপুরা।
২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারকে উৎখাত করতে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল। আর তাতেই বিজেপির হামলার মুখে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাদের হামলার মুখে পড়ছে সিপিএম নেতা-কর্মীরাও।
তৃণমূল নেতৃত্বের ওপর বিজেপির হামলার প্রতিবাদে এর আগে সিপিএম বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও।
তৃণমূল ও সিপিএমের লক্ষ্য এক। ত্রিপুরার বিজেপি সরকারকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত করা।
এ প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপিকে ঠেকাতে বামেরা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতে পিছপা হবে না।
তবে বিমান বসুর সঙ্গে একমত নন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ত্রিপুরায় তৃণমূল-সিপিএমের জোট প্রসঙ্গ সরাসরি উড়িয়ে না দিয়ে নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
বিজেপিকে হারাতে সব বিরোধী দলকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তৃণমূল নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে তার শর্ত একটাই, বাম-কংগ্রেসকে তৃণমূলের সমালোচনা বন্ধ করতে হবে। বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে না গিয়ে, বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হতে হবে।