ইতিহাসে প্রথমবার বৃষ্টি পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের ‘আইস ক্যাপ’, বা বরফের চূড়ায়।
আর্কটিক ও আটলান্টিকের মাঝামাঝিতে অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড। সেখানকার তিন হাজার ২১৬ মিটার বা ১০ হাজার ৫৫১ ফুট উচ্চতার পর্বতটিতে তাপমাত্রা সাধারণত হিমাঙ্কের নিচে থাকে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, অঞ্চলটিতে আকস্মিক স্বভাববিরুদ্ধ এ আবহাওয়া জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাবের নতুন সতর্কবার্তা।
ইউএস ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের সামিট স্টেশন জানায়, গত ১৪ আগস্ট গ্রিনল্যান্ডের বরফে ঢাকা চূড়ায় বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানা যায়নি।
অঞ্চলটিতে বৃষ্টিপাত অপ্রত্যাশিত বলে প্রস্তুতি না থাকায় আকস্মিক ওই বৃষ্টি রেকর্ড করা যায়নি বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
তবে সে সময় গ্রিনল্যান্ডজুড়ে মেঘ থেকে ৭০০ কোটি টন পানি নিঃসরণ হয়েছে বলে জানা গেছে।
গ্রিনল্যান্ডে অস্বাভাবিক গরমের তিন দিনে হয় ওই বৃষ্টি। সে সময় অঞ্চলটির তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এর ফলে দ্বীপের বড় অংশে বরফ গলতে দেখা গেছে সে সময়।
যুক্তরাজ্যের আয়তনের প্রায় চার গুণ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন।
বিজ্ঞানীদের মতে, মানবসৃষ্ট কারণে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে চলায় পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর প্রভাবে গলছে বরফ, বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা।
১৯৯৪ সাল থেকে গ্রিনল্যান্ডের কয়েক ট্রিলিয়ন টন বরফ গলে গিয়ে বেড়েছে সমুদ্রের উচ্চতা; ঝুঁকির মুখে ফেলেছে সারা বিশ্বের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের কোটি মানুষকে।
এরই মধ্যে সমুদ্রের উচ্চতা ২০ সেন্টিমিটার বেড়েছে এবং চলতি শতকের শেষ নাগাদ উচ্চতা বাড়তে পারে আরও ২৮ থেকে ১০০, এমনকি ২০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত।
গ্রিনল্যান্ডের সব বরফ গলে গেলে সারা পৃথিবীতে সমুদ্রের উচ্চতা বাড়বে প্রায় ছয় মিটার। তবে এমনটা ঘটতে কয়েক শ, এমনকি হাজার বছরও সময় লেগে যেতে পারে।
গত ১২ হাজার বছরের মধ্যে এখনই সবচেয়ে দ্রুতগতিতে গলছে গ্রিনল্যান্ডের বরফ। ২০১৯ সালে প্রতি মিনিটে অঞ্চলটি প্রায় ১০ লাখ টন বরফ হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।