আফগানিস্তানের উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় পাঞ্জশির উপত্যকা দখলে শত শত যোদ্ধা রওনা হয়েছে বলে জানিয়েছে তালেবান।
গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানের বিশাল অঞ্চল তালেবান নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হলেও প্রতিরোধের মুখে পাঞ্জশির উপত্যকা থেকে তাদের হাত গুটাতে হয়।
গত সপ্তাহে রাজধানী কাবুল দখলের মাধ্যমে সশস্ত্র সংগঠনটি আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর পাঞ্জশির দখলে সামরিক অভিযান চালানো হচ্ছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
তালেবানবিরোধী দুর্গ হিসেবে পরিচিত কাবুল থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তরে পাঞ্জশিরে আফগান সরকারের সাবেক সেনারা সম্প্রতি প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
তালেবানের পক্ষ থেকে রোববার রাতের টুইটবার্তায় বলা হয়, ‘ইসলামিক আমিরাতের শত শত মুজাহিদীন পাঞ্জশির প্রদেশ দখলে যাচ্ছে।
‘প্রাদেশিক কর্মকর্তারা শান্তিপূর্ণভাবে পাঞ্জশির হস্তান্তরে রাজি না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
পাঞ্জশিরে তালেবানবিরোধী প্রতিরোধ বাহিনীর নেতৃত্ব দেয়া আহমেদ মাসুদ জানান, তালেবানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আশা রাখেন তিনি। তবে তার বাহিনী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমরা তালেবানকে বোঝাতে চাই, আলোচনাই একমাত্র পথ। আমরা যুদ্ধ চাই না।’
আফগানিস্তানের সেনা, বিশেষ বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় মিলিশিয়া যোদ্ধাদের নিয়ে পাঞ্জশিরে নিজের বাহিনী গড়ে তুলেছেন মাসুদ।
আশির দশকে সোভিয়েতবিরোধী প্রতিরোধে আফগানিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন আহমেদ শাহ মাসুদ। তারই ছেলে আহমেদ মাসুদ।
আহমেদ শাহ মাসুদ (ডানে) ও তার ছেলে আহমেদ মাসুদ। ছবি: এএফপি
আহমেদ মাসুদ জানান, তালেবান পাঞ্জশির দখলের চেষ্টা করলে তার সমর্থকরা লড়াই করবে।
তিনি বলেন, ‘আমার বাহিনী প্রতিরোধ করতে চায়, লড়তে চায়। যেকোনো কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে তারা দাঁড়াতে চায়।’
এদিকে তালেবান পাঞ্জশিরে সামরিক অভিযান শুরু করে দিয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তালেবানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, পাঞ্জশিরে আক্রমণ শুরু হয়ে গেছে।
তবে মাসুদের এক সহযোগী জানান, পাঞ্জশিরের সরু প্রবেশপথ দিয়ে তালেবান যোদ্ধাদের ঢোকার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। লড়াইয়েরও কোনো খবর আসেনি।
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের পর শনিবার পাঞ্জশির সীমান্তঘেঁষা উত্তরাঞ্চলীয় বাঘলান প্রদেশের তিনটি জেলা থেকে তালেবানকে হটাতে সক্ষম হন তালেবানবিরোধী যোদ্ধারা।
ওই প্রতিরোধের বিষয়ে মাসুদের ভাষ্য, বাঘলানে তালেবানবিরোধী প্রতিরোধে নেতৃত্ব দেননি তিনি। স্থানীয় মিলিশিয়া সংগঠনই তালেবানের নৃশংসতার জবাব দিয়েছে।
আফগানিস্তানে বিভিন্ন জাতিগত সম্প্রদায়ের নেতা থেকে শুরু করে সবাইকে নিয়ে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন মাসুদ।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না।