আফগানিস্তানে আটকে আছেন বহু ভারতীয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে কাবুল থেকে দেশে ফেরানো হচ্ছে।
মাঝে জ্বালানি নিতে তাজিকিস্তানে একবার অবতরণ করে বিমানটি।
এর আগে কাবুল বিমানবন্দরের গেটের বাইরে থেকে ৭২ জনকে আটক করে নিয়ে যায় তালেবান জঙ্গিরা। তাদের অধিকাংশই ভারতীয় নাগরিক। একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ খবরের সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করছে।
যদিও তালেবান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তালেবান আফগানিস্তান দখলের পর এর আগে ভারতীয় কূটনৈতিক, দূতাবাসের কর্মী, আইটিবিপি জওয়ানসহ মোট ২০০ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
জানা গেছে, বিমানবাহিনীর আরেকটি যাত্রীবাহী বিমান কাবুলে রয়েছে। সেটিতেই ভারতীয়দের দেশে ফারনোর কথা। বিমানবন্দরে পৌঁছলেই তাদের নিয়ে রওনা দিত বিমানটি। কিন্তু প্রবেশপথের কিছুটা আগেই হামলা চালায় তালেবানরা। বন্দি বানিয়ে নেয়া হয় কমপক্ষে ৭২ জনকে।
তালেবানের হাত থেকে পালিয়ে আসা এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বন্দিদের মধ্যে বেশ কিছু আফগান নাগরিক ও শিখ আফগান রয়েছেন, তবে অধিকাংশই ভারতীয়। তারা সবাই রুজিরুটির জন্য আফগানিস্তানে ছিলেন। ভারতীয় দূতাবাসের তরফে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরই তারা দুপুর ১টা নাগাদ বড় গাড়িতে করে বিমানবন্দরের গেটের কাছে পৌঁছান। কিন্তু সঠিকভাবে যোগাযোগ না হওয়ায় বিমানবন্দরের বাইরেই আটকে পড়েন তারা।
আচমকাই সেখানে বেশ কিছু তালেবান হাজির হয়। তাদের হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। তারা অন্য গেট দিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। গাড়ির দরজা খোলা হলেই ভেতরে উপস্থিত পুরুষদের মারধর করা হয় এবং গাড়িটি নিয়ে কাবুলের তারাখিলের দিকে চলে যায়। ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি ও তার স্ত্রী এবং হাতে গোনা কয়েকজনই তালেবানের হাত থেকে বেঁচে পালিয়ে আসতে পেরেছেন। বাকিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে জানা নেই।
যদিও তালেবানের মুখপাত্র আহমাদুল্লাহ ওয়াসেক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রথম ধাপে ৪৫ জন, দ্বিতীয় ধাপে ১২০ ও তৃতীয় ধাপে ৮৫ জনকে ফিরিয়ে আনা হলেও এখনও এক হাজারের মতো ভারতীয় আফগানিস্তানে আটকে রয়েছেন। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পারিপার্শিক পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর যে উদ্ধারকাজে ক্রমাগত বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া অনেকে দূতাবাসে নিজেদের নাম নথিভুক্ত না করায় তাদের খুঁজে বের করতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
শুক্রবার রাতেই বিমানবাহিনীর আরেকটি সি-১৭ বিমান কাবুলে পৌঁছায়। সেই বিমানে কমপক্ষে ২৫০ জন ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।
ভারত সরকার জানিয়েছে, আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করছে নয়াদিল্লি। কাবুল বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকার প্রতি মুহূর্তের আপডেট নেয়া হচ্ছে। মার্কিন বাহিনীর সবুজ সংকেত মিললেই বিমান ওঠানামা করবে।