ভারতের ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করে কংগ্রেসের অস্থায়ী সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বিরোধী দলগুলিকে বলেছেন, ‘আমাদের জনগণকে স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল্যবোধ, নীতি এবং আমাদের সংবিধানে বিশ্বাসী সরকার দেয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পনা শুরু করতে হবে।’
বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ কৌশল তৈরির চেষ্টায় সোনিয়া গান্ধী শুক্রবার বিরোধী দলের নেতাদের একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন।
১৯টি বিরোধী দলের এই ভার্চুয়াল বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী জাতীয় নির্বাচনের জন্য ‘পরিকল্পিতভাবে পরিকল্পনা’ করে ‘বাধ্যবাধকতার উর্দ্ধে’ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্য কোনো বিকল্প নেই।
কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘আমাদের সকলেরই বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু স্পষ্টতই সময় এসেছে যখন আমাদের জাতির স্বার্থ দাবি করে, আমরা সেই বাধ্যবাধকতার উপরে উঠি।’
‘এটি একটি চ্যালেঞ্জ, কিন্তু একসঙ্গে আমরা এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করলে সাফল্য নিশ্চিত। কারণ একসঙ্গে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই।’
সম্প্রতি বিরোধী দলগুলোর নিজেদের দ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে পার্লামেন্টের বর্ষা অধিবেশনে অভূতপূর্ব ঐক্য প্রদর্শন করে। ওই সময় থেকেই শুক্রবারের বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু হয়।
উল্লেখ্য পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলি পেগাসাস আড়িপাতা কেলেঙ্কারি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং তিনটি কেন্দ্রীয় আইন বাতিলের দাবিতে চলতি কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছিল।
এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, কংগ্রেসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও রাহুল গান্ধী, এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার, আরজেডির তেজস্বী যাদব এবংসিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, লোকতান্ত্রিক জনতা দলের শরদ যাদব, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জেডিএস নেতা এইচ ডি দেবেগৌড়া। এছাড়াও সমাজবাদী পার্টি, জম্মু-কাশ্মীরের পিডিপি, কেরল কংগ্রেস (এম) নেতৃত্বও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সংগঠিতভাবে বিজেপিকে টক্কর দেয়ার আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যবহার নিয়ে সরব হওয়ার জন্য বিরোধী নেতাদের কাছে আবেদন জানান তিনি৷
পাশাপাশি, করোনা প্রতিষেধক বণ্টন নিয়ে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়েও সরব হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন বলেন, ‘দেশের অবস্থা ভাল নয়। মানুষকে বিপদে ফেলছে এমন ইস্যু নিয়ে সকলকে সরব হতে হবে।’