তালেবানের ভয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টায় থাকা নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে আফগানিস্তানের দখল নেয়া কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান। তারা বলছে, ভ্রমণের বৈধ কাগজ না থাকলে কাউকেই বিমানবন্দরে থাকতে দেয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোববার তালেবানের কাবুল দখলের মধ্যেই দেশ ছাড়ার জন্য কয়েক হাজার মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় জমান। সংঘাতের কারণে বিমানবন্দরটিতে বাণিজ্যিক ফ্লাইটের চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ইতোমধ্যে বিমানবন্দর থেকে প্রায় আট হাজার আফগান নাগরিককে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে জায়গা না পেয়ে বিপজ্জনকভাবে বিমানের গায়ে ঝুলে দেশ ছাড়ার চেষ্টায় নিহত হয়েছেন কয়েকজন।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বিমান থেকে পড়ে, গুলিতে ও ভিড়ের কারণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এখনও সেখানে আরও কয়েক হাজার মানুষ দেশ ছাড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তালেবান নেতা বলেছেন, ‘আমরা বিমানবন্দরে কাউকে আঘাত করতে চাই না।’
বুধবার ন্যাটোর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওইদিনও কাবুল বিমানবন্দরের গেটে পদদলিত হয়ে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আফগান নাগরিকদের পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া বিমানবন্দরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কাগজপত্র থাকলেও অনেককেই বিমানবন্দরের কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছে না তালেবান যোদ্ধারা। তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও রাইফেলের বাঁট দিয়ে পিটিয়ে লোকজনকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
অভিযোগের বিষয়ে তালেবান রয়টার্সকে জানিয়েছে, সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও কাউকে আঘাতের উদ্দেশ্য তাদের নেই।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর গোষ্ঠীটি প্রতিশোধ নেয়া শুরু করতে পারে এমন আশঙ্কায় দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন অনেক আফগান। তবে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি।
যারা বিদেশি বাহিনীর হয়ে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেছেন অথবা অনুবাদক হিসেবে কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে- জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদিন বলেন, ‘যারা বিদেশি বাহিনীর সহায়ক হিসেবে কাজ করেছিলেন তাদের কেউ প্রতিহিংসার শিকার হবেন না। যেসব তরুণ এই মাটিতে জন্মেছেন, আমরা চাইব না তারা দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাক। তারা আমাদের সম্পদ।’
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ আশ্বস্ত করে বলেন, কেন তারা বিদেশি শক্তির সঙ্গে কাজ করেছিলেন সে বিষয়ে কোনো জবাবদিহি করতে হবে না।