আপাতত বন্ধ ভারত-আফগানিস্তান বাণিজ্য। আবার কবে শুরু হবে সেটি বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কেউই। গত কয়েক বছরে বাণিজ্যিক সম্পর্কে অনেকটাই উন্নতি করেছিল ভারত ও আফগানিস্তান। দুই দেশের মধ্যেই বিপুল পরিমাণ আমদানি-রপ্তানিও চলত। তবে তালেবানের হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের বাণিজ্যই।
পাকিস্তানের ওপর দিয়েই আফগানিস্তান থেকে কার্গো বিমানে আমদানি-রপ্তানি চালাত ভারত। কাবুল দখলের পর তালেবান সেসব বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের ডিরেক্টর জেনারেল ড. অজয় সাহানি।
তবে ভবিষ্যতে আবার আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে বলে আশাবাদী তিনি। অজয় সাইনি মনে করেন, অর্থনীতিই যে মূল ভিত্তি সেটি কিছুদিনের মধ্যেই বুঝে যাবে আফগানিস্তান।
অজয় সাহানির মতে, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে, তার ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘রপ্তানির ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় পার্টনার ভারত। এ বছরেও ৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের রপ্তানি করেছে দেশটি। অন্যদিকে আফগানিস্তান থেকে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলারের আমদানি হয়েছে। শুধু তাই নয়, আফগানিস্তানের অন্তত ৪০০টি প্রজেক্টে ভারত ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে।’
তবে পাকিস্তানের ওপর দিয়ে আসা কার্গো বিমান বন্ধ হলেও দুবাইয়ের মাধ্যমে যে রুটে বাণিজ্য চলে, সেটি এখনও খোলা আছে। ভারত থেকে মূলত চিনি, ওষুধ, চা, কফি, পোশাক, মসলা ও বিদ্যুৎ সংযোগের ট্রান্সমিশন টাওয়ার যেত আফগানিস্তানে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তান থেকে আসত শুকনো ফল, আঠা ও কিছু পেঁয়াজ। তবে এত অস্থিরতার মধ্যেও আবার বাণিজ্য শুরু হবে বলে আশা রাখছেন অজয় সাহানি।
তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আফগানিস্তানও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বুঝতে পারবে। তারা বুঝবে যে অর্থনীতি ছাড়া কোনো গতি নেই। ভারতের ভূমিকার গুরুত্বও বুঝবে তারা।’
তবে এই অস্থিরতার মধ্যে শুকনো ফলের দাম যে চড়চড় করে বেড়ে যাবে, সেই ইঙ্গিত তিনি পাচ্ছেন। ৮৫ শতাংশ শুকনো ফল যেমন আখরোট, কিশমিশ, পেস্তা আফগানিস্তান থেকে আমদানি করে ভারত। তাই বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেলে এর প্রভাব পড়বে শুকনো ফলের দামে।
তিনি বলেন, ‘আমি বলছি না যে দামের ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো প্রভাব পড়বে, তবে আমদানি যেহেতু বন্ধ, তাই দাম বাড়ার আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।’