সাত দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্পে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ক্যারিবীয় দেশ হাইতি। এতে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৩০৪ জনের।
ভূমিকম্পে আহত হয়েছে এক হাজার ৮০০ মানুষ। নিখোঁজ রয়েছে অনেকে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় পেতিত ত্রোউ ডে নিপেস শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে অনুভূত হয় শনিবারের ভূমিকম্পটি। উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভূমিকম্পের পর ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে অঞ্চলটি। পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে গির্জা, হোটেল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘরসহ প্রায় এক হাজার স্থাপনা। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও হাজারখানেক ভবন।
ধ্বংসস্তূপ থেকে অনেককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ।
ভূমিকম্পের তীব্রতায় দেড় শ কিলোমিটার দূরে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স কেঁপে উঠলেও সেখানে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে সুদূর কিউবা আর জ্যামাইকাতেও।
১১ বছর আগে সাত মাত্রার একটি ভূমিকম্পে হাইতিতে মৃত্যু হয়েছিল হাজারো মানুষের। ওই ভূমিকম্পের চেয়েও এবারের কম্পনের তীব্রতা বেশি। উৎসস্থলের গভীরতা অনেক কম ছিল।
এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গেছেন হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি। তিনি ঘোষণা করেছেন এক মাসের জরুরি অবস্থা।
পেতিত ত্রোউ ডে নিপেসের নিকটবর্তী সবচেয়ে বড় শহর লেস কায়েসেও অনেক ভবন ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে অথবা গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দারাই ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের খুঁজে বের করে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। হাসপাতালে ভিড়ের কারণে চিকিৎসার অপেক্ষায় অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, কম্পনের তীব্রতায় অনেক জায়গায় মাটি আলগা হয়ে যাওয়ায় ভূমিধসের ঝুঁকিতে আছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। এরই মধ্যে কয়েক জায়গায় ভূমিধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কয়েকটি শহরে।
এ ছাড়া মৌসুমি ঝড় গ্রেসের কারণে অতি বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের প্রভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে।
ভূমিকম্প কবলিত কয়েকটি এলাকা বিভিন্ন অপরাধীচক্রের নিয়ন্ত্রণে বলে উদ্ধারকর্মীরা প্রবেশ করতে পারছে না।
প্রেসিডেন্ট জোভেনের মোউসে হত্যাকাণ্ডে এক মাস ধরেই অচলপ্রায় হাইতির অর্থনীতি ও রাজনীতি।
করোনাভাইরাস মহামারি আর লকডাউনের প্রভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে দেশটির ভঙ্গুর স্বাস্থ্য খাত। দুর্ভিক্ষের মুখে আছে বিপুলসংখ্যক মানুষ।