বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাজার-ই-শরিফসহ পুরো উত্তরাঞ্চল এখন তালেবানের

  •    
  • ১৫ আগস্ট, ২০২১ ০৮:৫৪

মাজার-ই-শরিফে তালেবানবিরোধী রণাঙ্গণের দুই নেতা উজবেক আদিবাসীদের প্রধান আব্দুল রশিদ দোস্তুম ও তাজিক আদিবাসীদের প্রধান আত্তা মোহাম্মদ নূর প্রদেশটি ছেড়ে পালিয়েছেন। ফেসবুকে দেয়া পোস্টে শনিবার নূর পরাজয়ের জন্য সরকারি বাহিনীকে দায়ী করেন।

আফগানিস্তানের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর মাজার-ই-শরিফও দখল করল সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান।

এর মধ্য দিয়ে দেশের পুরো উত্তরাঞ্চল এখন গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে।

গত কিছুদিন আফগান সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উত্তরের একমাত্র অঞ্চল ছিল তালেবানবিরোধী শহরটি। দিন দুয়েক আগেই অঞ্চলটিতে সফর করেছিলেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।

নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে তালেবানবিরোধী আঞ্চলিক রণাঙ্গনের দুই প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে জরুরি বৈঠকও করেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ভেস্তে গিয়ে কান্দাহার-হেরাতের পর মাজার-ই-শরিফেরও নিয়ন্ত্রণ হারাল ঘানি সরকার।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বালখ প্রদেশের রাজধানী মাজার-ই-শরিফ আফগানিস্তানের চতুর্থ বৃহৎ শহর। কোনো রকম প্রতিরোধ ছাড়াই শহরটি দখল করেছে তালেবান যোদ্ধারা।

বালখের আইনপ্রণেতা আবাস ইব্রাহিমজাদা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, প্রথমে আফগান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে তালেবানের কাছে। তাদের অনুসরণ করে সরকার সমর্থিত বাহিনীগুলো। এরপর আত্মসমর্পণে আর দেরি করেনি অন্য মিলিশিয়ারাও।

উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান সীমান্তসংলগ্ন মাজার-ই-শরিফ আফগানিস্তানের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র। শেষবার নব্বইয়ের দশকে শহরটি দখল করেছিল তালেবান।

মাজার-ই-শরিফে তালেবানবিরোধী রণাঙ্গণের দুই নেতা উজবেক আদিবাসীদের প্রধান আব্দুল রশিদ দোস্তুম ও তাজিক আদিবাসীদের প্রধান আত্তা মোহাম্মদ নূর প্রদেশটি ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দোস্তুমের ফাঁকা বাড়ির ভেতরে অবস্থান নিয়েছে তালেবান সদস্যরা।

গত সপ্তাহের শেষে প্রেসিডেন্ট ঘানির সঙ্গে বৈঠকে দোস্তুম দাবি করেছিলেন, শহরের উত্তরাঞ্চল দিয়ে তালেবান যোদ্ধারা একাধিকবার প্রবেশের চেষ্টা করলেও প্রতিবার তাদের আটকে দেয়া হয়েছে।

ফেসবুকে দেয়া পোস্টে শনিবার নূর পরাজয়ের জন্য সরকারি বাহিনীকে দায়ী করেন। তিনি এবং দোস্তুম নিরাপদে আছেন জানিয়ে লেখেন, আফগান বাহিনী নিজেদের সব অস্ত্র ও সরঞ্জাম তালেবানের কাছে হস্তান্তর করেছে।

মাজার-ই-শরিফের ভীত-সন্ত্রস্ত এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, ‘তালেবান যোদ্ধারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। আমরা ঘরের ভেতরে বসে আছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা ভীত। আমার বাচ্চারা, আমার স্ত্রী ভয়ে কাঁদছে।

‘কালকের দিনটা আমরা দেখব কি না কিংবা কী করব জানি না।’

২০ বছর অবস্থানের পর চলতি বছরের মে মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর সেনারা আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করে। এরপর আগ্রাসী অভিযান চালিয়ে মাত্র তিন মাসে দেশের বড় অংশের দখল নিয়ে নেয় কট্টরপন্থি তালেবান।

গত ১০ দিনে দেশের ৩৪ প্রদেশের অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান। শনিবার মাজার-ই-শরিফ ছাড়াও দখল করে পাকতিকা ও কুনার প্রদেশের রাজধানী। রাজধানী কাবুলের ১১ কিলোমিটারের মধ্যেও পৌঁছে গেছে যোদ্ধারা।

বড় শহরগুলোর মধ্যে এখন আফগান সরকারের দখলে আছে কাবুল ও জালালাবাদ।

সহিংসতায় গৃহহীন হয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের লাখো মানুষ। অনেকেই নিরাপত্তার আশায় পৌঁছেছে রাজধানী কাবুলে; দিনরাত কাটাচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।

পশ্চিমা দেশগুলো দ্রুত তৎপরতায় আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিচ্ছে নাগরিকদের। বিদেশি সেনা প্রহরায় ভিড় বেড়েছে কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

এ বিভাগের আরো খবর