পাকিস্তানে গত মাসে চীনা প্রকৌশলী বহনকারী বাস আত্মঘাতী বোমা হামলায় বিস্ফোরিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি।
পাকিস্তানের মন্ত্রী বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি বলেন, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র এবং আফগানিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা এনডিএসের যোগসাজশে ওই হামলা হয় বলে তদন্তে জানা গেছে।
১৪ জুলাই সকালে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কোহিস্তান জেলায় যাত্রীবাহী বাস দাসু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে যাওয়ার পথে গিরিখাদে পড়ে যায়। খাদে পড়ার আগে বাসটিতে বিস্ফোরণ হয়।
ওই ঘটনায় প্রকল্পের ৯ চীনা প্রকৌশলীসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ২৮ জন।
বাস বিস্ফোরণ ঘটনার পূর্ণ তদন্তের অঙ্গীকার সে সময় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে করা হয়।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা শুরুতে জানিয়েছিলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গ্যাস লিক করায় বিস্ফোরণটি হয়।
তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাউ লিজিয়ান ওই ঘটনাকে ‘বোমা বিস্ফোরণ’ হিসেবে অভিহিত করেন।
পরে পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী জানান, কোহিস্তানে বাস বিস্ফোরণে সন্ত্রাসবাদের শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। কারণ প্রাথমিক তদন্তে বিস্ফোরক পাওয়া গেছে।
ওই হামলার তিন দিন পর চীনের ১৫ সদস্যের তদন্তকারী দল পাকিস্তানে পৌঁছায়।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ বলেছিলেন, ‘বাস বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সংস্থা ওই ঘটনা তদন্তে কাজ করছে। তদন্ত দলে চীনের ১৫ কর্মকর্তাকেও যুক্ত করা হয়েছে।’
তদন্তের হালনাগাদ তথ্য চীনের সরকারকে জানানো হচ্ছে বলেও জানান পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা চীন সরকারকে ফের আশ্বস্ত করছি, চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রু ও চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্বে ফাটল ধরানোর চেষ্টারত দুর্বৃত্তদের কোনোভাবেই ক্ষমা করা হবে না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে চীন-পাকিস্তানের মৈত্রী ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না।
রোববার দাসু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাছে বাস বিস্ফোরণ ঘটনার নিন্দা জানায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করতে সব রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় নিরাপত্তা পরিষদ।