আফগানিস্তানে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিরসনে পাকিস্তান একমাত্র দাওয়াই- যুক্তরাষ্ট্রের এমন মনোভাবের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইমরান খান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে এমনটা জানানো হয়েছে।
তালেবান ও আফগান সরকারের শান্তি আলোচনা থেমে আছে অনেক দিন।
তালেবানকে আবার আলোচনায় বসাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি আফগানিস্তানে সহিংসতা বন্ধে উদ্যোগ নিতেও ইসলামাবাদকে চাপ দেয়া হচ্ছে।
ইসলামাবাদে নিজের বাসভবনে বিদেশি সাংবাদিকদের ইমরান বলেন, ‘আফগানিস্তানের সমস্যার সমাধান ২০ বছর ধরে সামরিকভাবে করতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা এতে সফল হয়নি।
‘আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর অঞ্চল দখল নিয়ে সরকারি বাহিনী ও তালেবানের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। শুধু এই সংঘর্ষ থামাতেই পাকিস্তানকে দরকারি মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।’
২০০১ সালে তালেবান সরকার উৎখাতের পর টানা ২০ বছর আফগানিস্তানে অবস্থান করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী।
চলতি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যেই নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহার করছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর আফগানিস্তানের বড় অংশ এরই মধ্যে তালেবানরা দখলে নিয়ে নিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান বলেন, ‘আমি মনে করি, ভারতকে নিজেদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এ কারণেই এখন পাকিস্তানের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ওয়াশিংটনের।’
আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সমাধান কঠিন বলেও মন্তব্য করেন ইমরান।
ইমরান জানান, পাকিস্তান সফরের সময় শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে তালেবান নেতাদের রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তালেবান নেতারা সে সময় আমাকে বলেছিলেন, যতদিন পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি রয়েছেন, ততদিন আমরা আফগান সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসব না।’
প্রেসিডেন্ট ঘানির নেতৃত্বাধীন আফগান সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের পুতুল সরকার হিসেবে দেখে তালেবান।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে তালেবান ও আফগান সরকারের প্রতিনিধিরা শান্তি আলোচনায় বসে। তবে ওই সব বৈঠকের কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি শেষ পর্যন্ত দেখা যায়নি।
আফগানিস্তানে তালেবানের সাম্প্রতিক অগ্রযাত্রায় আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একযোগে সশস্ত্র সংগঠনটির বিরুদ্ধে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী।
তবে ৩১ আগস্টের পর যুক্তরাষ্ট্র আফগান সরকারকে এ সামরিক সহায়তা দেবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ইমরান খান বলেন, ‘আমরা বেশ পরিষ্কারভাবেই জানিয়ে দিয়েছি, বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছাড়ার পর পাকিস্তানের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধরনের সামরিক ঘাঁটি হবে না।’