আকাশ পথে ঘাটালে গিয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার ঝাড়গ্রামের বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন, আবহাওয়া ভালো থাকলে মঙ্গলবার ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন তিনি। সেই কথা মতো আজ ঝাড়গ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে ঘাটালে যান।
সেখানে কয়েক লাখ হেক্টর চাষের জমি পানির তলায়। নষ্ট হয়ে গেছে জমির ফসল। হাজার হাজার বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে এখানে বন্যা করানো হচ্ছে। বারবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার কিছুতেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন দিচ্ছে না। এই প্রজেক্ট তৈরি না হলে, ঘাটালকে বাঁচানো যাবে না। ঝাড়গ্রাম থেকে আসার পথে হেলিকপ্টার থেকে দেখেছি, বাড়িঘর, মাঠ, দোকান, সব ভেসে গিয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন দাবি করেন, নিম্ন দামোদর অববাহিকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। চেক ড্যাম তৈরি করতে দেয়া হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু কেন্দ্র সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন না দেয়াতে ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও বলেন, ‘মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগ নেবে রাজ্য সরকার। সৌমেন মহাপাত্র, জুন মালিয়া, দেব সবাইকে কেন্দ্রীয় সেচ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বলবো। কেন্দ্রের কাছে প্রতিনিধিদল পাঠাবো।’
এর আগে আমতায় সড়ক পথে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে অভিযোগ করেছিলেন, ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি করপোরেশন) থেকে অতিরিক্ত পানি, রাজ্যকে না জানিয়ে, ইচ্ছে মতো ছাড়াতে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যাকে তিনি ম্যান মেইড (মানুষ সৃষ্ট) বন্যা বলে অভিহিত করেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী ঘাটালে পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকায় কিছুটা পায়ে হেঁটে এবং ঘুরে দেখেন। কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলেন। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেয়া দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ঘাটালের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, সাংসদ দেব, সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, পানি উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।