পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশে গত সপ্তাহে ভেঙে দেয়া মন্দির মেরামত করে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
উপাসনালয়টি ভাঙার পাঁচ দিনের মধ্যে মন্দিরটি মেরামত করা হয় বলে সরকারি এক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
গত বুধবার পাঞ্জাবের রহিম ইয়ার খান জেলার ভং শহরে মন্দিরে হামলা চালায় একদল মুসলমান।
ওই সময় মন্দিরের গণেশ মূর্তি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। এ ছাড়া মন্দিরের বিভিন্ন অংশও সে সময় ভেঙে ফেলা হয়।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৯ বছরের এক ছেলেকে ব্লাসফেমি মামলায় জামিন দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয় স্থানীয় মুসলমানদের একাংশ।
তাদের অভিযোগ, ওই ছেলে মাদ্রাসার লাইব্রেরিতে প্রস্রাব করেছিল।
২৪ জুলাই দারুল উলুম আরবিয়া তেলিমুল কোরআন মাদ্রাসার হাফেজ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের অভিযোগের ভিত্তিতে ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলা করে ভং পুলিশ। পাকিস্তান দণ্ডবিধির ২৯৫-এ ধারায় মামলাটি হয়।
মামলার পর মাদ্রাসা প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চান স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বয়োজ্যেষ্ঠরা। তাদের ভাষ্য, আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং মানসিক প্রতিবন্ধী।
পরে ওই ছেলেকে আদালত জামিন দেয়ায় উত্তেজিত কয়েকজন মুসলমান বুধবার গণেশ মন্দিরটিতে হামলা চালায়।
হামলায় জড়িত অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
রহিম ইয়ার খান জেলা প্রশাসক খুররাম শাহজাদ জানান, মন্দিরটিতে হিন্দু সম্প্রদায় কয়েক দিনের মধ্যে প্রার্থনা শুরু করতে পারবেন।
এ ছাড়া ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ইসলামাবাদ থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক জানান, মন্দিরে হামলার পর পাঞ্জাবের দক্ষিণাঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ব্লাসফেমি আইনে মামলা হওয়া ছেলেটির পরিবারসহ ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে রয়েছে।
১৯৯০ সালের পর থেকে পাকিস্তানে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে মামলা হয়।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে কমপক্ষে ৭৯ জনকে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ লোকজন।
তাদের মধ্যে অভিযুক্ত, তাদের পরিবার, আইনজীবী এমনকি এক বিচারকও রয়েছেন।