বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১ দিনে ৩ প্রাদেশিক রাজধানী দখল তালেবানের

  •    
  • ৯ আগস্ট, ২০২১ ০৯:৪২

আফগান কর্মকর্তারা জানান, রোববার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরাঞ্চলের কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী কুন্দুজ, সার-ই-পল প্রদেশের রাজধানী সার-ই-পল ও তাখার প্রদেশের রাজধানী তালোকান থেকে সরকারি বাহিনী হটাতে সক্ষম হয় তালেবান।

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় কুন্দুজসহ তিনটি প্রদেশের রাজধানী এক দিনেই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান।

দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই শেষে রোববার ওই শহরগুলো তালেবানের হাতে আসে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

আফগান কর্মকর্তারা জানান, ওই দিন কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরাঞ্চলের কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী কুন্দুজ, সার-ই-পল প্রদেশের রাজধানী সার-ই-পল ও তাখার প্রদেশের রাজধানী তালোকান থেকে সরকারি বাহিনী হটাতে সক্ষম হয় তালেবান।

তালেবান রোববার এক বিবৃতিতে জানায়, কুন্দুজে পুলিশের সদর দপ্তর, গভর্নরের কম্পাউন্ড ও কারাগার সংগঠনটি দখলে নিয়েছে।

কুন্দুজ প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য আমরুদ্দিন ওয়ালি বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) দুপুর থেকে তীব্র লড়াই শুরু হয়। সরকারি সব সদর দপ্তর এখন তালেবানের দখলে।

‘শুধু সামরিক ঘাঁটি ও বিমানবন্দর আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখান থেকে তালেবানকে প্রতিহত করছে বাহিনীর সদস্যরা।’

কুন্দুজের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ৩০ জনের বেশি আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

একই দিন আরেক বিবৃতিতে তালেবান জানায়, প্রাদেশিক রাজধানী সার-ই-পলও দখল করেছে সংগঠনের যোদ্ধারা।

সার-ই-পল প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ নুর রহমানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, রাজধানী শহরের সব সরকারি ভবন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা শহর ছেড়ে কাছে এক সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থান নিয়েছে।

সার-ই-পলের নারী অধিকারকর্মী পারউইনা আজিমি জানান, সংঘর্ষের একপর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর বাকি সদস্যরা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সেনা ছাউনিতে পিছু হটতে বাধ্য হয়।

তালেবান রোববার বিকেলে এক টুইটবার্তায় জানায়, প্রাদেশিক রাজধানী তালোকানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে।

নিরাপত্তা বাহিনীর এক সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আফগান সরকারের সহায়তা না পাওয়ায় আজ দুপুরে আমরা শহরটি ছেড়ে যাই।

‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে তালোকান এখন পুরোপুরি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।’

রোববারের আগের দুই দিন আরও দুই প্রাদেশিক রাজধানী তালেবানের দখলে যায়।

এর আগে শনিবার সকালে উত্তরাঞ্চলীয় তুর্কমেনিস্তান সীমান্তবর্তী জওজান প্রদেশের রাজধানী শেবেরঘান তালেবান নিয়ন্ত্রণে নেয়।

শুক্রবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইরানের সীমান্তবর্তী জারাঞ্জ দখলের মাধ্যমে প্রথম দেশটির কোনো প্রদেশের রাজধানী নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় তালেবান।

আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শনিবার বিকেলে বলা হয়, শেবেরঘানে তালেবানের বেশ কয়েকটি স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা।

তিন দিনে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়া পাঁচ প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে কুন্দুজ দখল সংগঠনটির সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভৌগোলিক ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কুন্দুজ আফগানিস্তানের অন্যতম বড় শহর। একই সঙ্গে এটি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত।

রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের অন্যান্য প্রধান শহরের সঙ্গে কুন্দুজের সরাসরি সড়কপথ রয়েছে। এ ছাড়া কুন্দুজ প্রদেশের সীমান্তেই রয়েছে তাজিকিস্তান।

কুন্দুজ-তাজিকিস্তান সীমান্ত হয়ে আফিম ও হেরোইন মধ্যএশিয়ায় পাচার হয়। এরপর সেসব ইউরোপে চালান দেয়া হয়।

কুন্দুজ তালেবানের হাতে থাকার অর্থ আফগানিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাদক পাচারের পথ এখন সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত আফগান সরকার উৎখাতে মরিয়া তালেবান।

এ নিয়ে আফগান নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদিনই তাদের সংঘর্ষ বাঁধছে।

২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলা চালানো জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে তালেবানের সম্পর্কের জেরে আফগানিস্তানে সে সময় সামরিক অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো।

মিত্র বাহিনীর সম্মিলিত অভিযানে ওই বছরই আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে তালেবানকে উৎখাত করা হয়।

তালেবান উৎখাত হলেও আফগানিস্তানে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর অবস্থান করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত দেশের সেনারা।

চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের আগেই আফগানিস্তান থেকে সব সেনা সরাতে নিজেদের সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তবে সেপ্টেম্বর নয়, চলতি মাসেই আফগানিস্তান ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশও নিজেদের সব সেনা এ সময়ের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি থেকে গুটিয়ে নিচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর