আফ্রিকার সমুদ্র উপকূলে নৌকা ডুবে ৩০ নারী ও আট শিশুসহ ৪২ অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ হয়েছে। তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওয়েস্টার্ন সাহারা অঞ্চলের উপকূলবর্তী শহর দাখলার কাছে হয় এ নৌকাডুবি। উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকার মাগরেব অঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত ওয়েস্টার্ন সাহারা বিতর্কিত একটি সমুদ্র অঞ্চল।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, মরক্কো নিয়ন্ত্রিত দাখলা থেকে নৌকাটি ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই উত্তাল সাগরে ডুবে যায় সেটি। আরোহীদের মধ্যে মাত্র ১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
স্পেনভিত্তিক অভিবাসী অধিকার সংস্থা ওয়াকিং অ্যাক্রস বর্ডার্স ও দাতব্য সংস্থা স্প্যানিশ কমিশন ফর রিফিউজি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যদিও মরক্কান প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দুই দিন ধরে তীরে ১২টি মরদেহ ভেসে আসার খবর প্রকাশ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, জীবিতদের উদ্ধার করেছেন স্থানীয় জেলেরা।
১৯৭৫ সালে ওয়েস্টার্ন সাহারা দখল ও নিজেদের বলে দাবি করে মরক্কো। তখন থেকেই সেখানে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দেশটির নৌবাহিনী। বিদ্রোহী গোষ্ঠী পোলিসারিও ফ্রন্ট মরক্কোর কাছ থেকে স্বাধীনতার দাবিতে অঞ্চলটিতে তৎপর।
এদিকে, ওয়েস্টার্ন সাহারা উপকূল থেকে আরও উত্তরে সাগর থেকে ৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে মরক্কান নৌবাহিনী উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ম্যাপ।
দাখলা থেকে কয়েক শ মাইল দূরে লাইয়ুনে শহরের দক্ষিণের ওই অঞ্চলে আরও ৫৯ জনকে খুঁজছে নৌবাহিনী। নিখোঁজদের মধ্যে ১৪ জন নারী ও চারজন শিশু।
এ ছাড়া স্প্যানিশ মেরিটাইম রেসকিউ সার্ভিস শুক্রবার পৃথক অভিযানে ৬৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ক্যানারি আইল্যান্ডের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে।
আটলান্টিক মহাসাগরে আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল ও স্পেনের ক্যানারি আইল্যান্ডের মাঝামাঝি অংশে নৌকাডুবি ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যু প্রায় নিয়মিত ঘটনা। তবে সম্প্রতি এ তালিকায় নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
অঞ্চলটিতে নৌকাডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা বেশ কঠিন। আরোহীদের মরদেহও খুব কম সময়েই উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ক্যানারি আইল্যান্ড অভিমুখে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ২৫০ অভিবাসনপ্রত্যাশীর। ওয়াকিং অ্যাক্রস বর্ডার্সের দাবি, এ সংখ্যা প্রায় দুই হাজার।
গত বছরের তুলনায় এ বছরের অর্ধেক সময়ে ক্যানারি আইল্যান্ডে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীর হার ১৫৬ শতাংশ বেশি বলেও জানিয়েছে আইওএম।