পাঁচ দিনের সফর সেরে কলকাতায় ফেরার আগে দিল্লিতে দাঁড়িয়েই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, দুই মাস অন্তর তিনি দিল্লি আসবেন।
অর্থাৎ বাংলায় ফেরার আগে তিনি বুঝিয়ে দিলেন বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করতে তিনিই মধ্যস্থতার কাজটি করবেন।
এদিন মমতা বলেন, ‘দেশ বাঁচাতে হবে। বিরোধীরা যে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে!’ ফেরার আগে জানান, সফর সফল হয়েছে। উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলেই জানান তিনি।
দিল্লি বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে শুক্রবার সংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, ‘সফর সফল। রাজনৈতিক এবং রাজ্যের উন্নয়ন উভয় স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে, এই বিশ্বাস নিয়েই এগোতে চাই। গণতন্ত্র বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, এটাই আমাদের স্লোগান। কৃষক ও শ্রমিকদের পক্ষে এবং বেকারত্বের ইস্যুতে আমাদের লড়াই চলবে। তবে আমি ঠিক করেছি দুই মাস অন্তর একবার করে আসব।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তার কী আলোচনা হয়েছিল সেই প্রসঙ্গও এদিন ফের টেনে আনেন মমতা। বলেন, ‘আমি আগেই প্রধানমন্ত্রীকে বলে এসেছি যে তৃতীয় ঢেউয়ের বাড়াবাড়ি যাতে রোখা যায়, আর ভ্যাকসিন যেন ঠিকমতো পাওয়া যায়।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশে গণতন্ত্র যখন বিপন্ন হয়, তখন দেশ ভালো থাকে না। আমাদের দেশ বাঁচানোর কাজ করতে হবে।’
এদিন পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে কৃষক আন্দোলন—সবকিছু নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফের স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আমরা কৃষকদের পাশে আছি।’ এমন কি পেগাসাস ইস্যুতেও যে কেন্দ্রকে ছেড়ে কথা বলবে না বিরোধীরা, সেই বার্তা দিতে এদিন রাহুল গান্ধীর ডাকা বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস পার্লামেন্টারি দলের প্রতিনিধিও।
তবে দিল্লিতে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক না হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে ইতিউতি যে জল্পনা শুরু হয়েছিল, তা কিছুটা সামলেছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি জানান, ‘শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। উনি মুম্বই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরেরবার যখন আসব তখন দেখা হবে।’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পাওয়ার বৈঠক না হওয়ায় বিরোধী ঐক্যের বৃত্তটা সম্পূর্ণ করতে পারছিলেন না মমতা। কিন্তু শরদ পাওয়ারের সঙ্গে অন্তত কথা হওয়ার ফলে সেই চাপান উতোরটা দূর করা গিয়েছে। পরের সফরে বৈঠকও হয়ে যাবে।