চীনের পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসু প্রদেশের নানজিং শহরে সম্প্রতি প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের ধরন রাজধানী বেইজিং ও দেশটির পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
একে ২০১৯ সালে চীনের উহান শহরে শনাক্ত হওয়া করোনার আদি ধরনের পর সবচেয়ে সংক্রামক বলছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
বিবিসির শুক্রবারের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
২০ জুলাই নানজিংয়ের ব্যস্ত বিমানবন্দরে প্রথম করোনার ধরনটি শনাক্ত হয়।
এরপর এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ জনের শরীরে এর সংক্রমণ দেখা গেছে।
চীনা ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস এক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ১১ আগস্ট পর্যন্ত নানজিং বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
নানজিং কর্তৃপক্ষ পুরো শহরে গণহারে করোনা পরীক্ষা শুরু করেছে।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, নানজিংয়ের ৯৩ লাখ বাসিন্দার প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হবে। যারা শহরটিতে ভ্রমণ করছেন, তাদেরও পরীক্ষা করা লাগবে।
চীনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, দেশটিতে করোনার সাম্প্রতিক প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনার অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের যোগসূত্র রয়েছে।
এদিকে বিমানবন্দর থেকে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় তোপের মুখে পড়েছে নানজিং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, যথাযথ তদারকির ঘাটতি, অপেশাদার ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য সমস্যা রয়েছে নানজিং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।
চীনা নাগরিকদের করোনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, বেইজিং, চেংডুসহ কমপক্ষে ১৩টি শহরে এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।
অবশ্য বিশেষজ্ঞদের বরাতে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, করোনার এ সংক্রমণ প্রাথমিক ধাপে রয়েছে এবং এটির নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
নানজিং কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেহে করোনা শনাক্ত হওয়া সাতজনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে চীন উদ্ভাবিত করোনা প্রতিরোধী টিকা ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম কি না, এ নিয়ে দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকজন প্রশ্ন করেছেন।
চীনে সাম্প্রতিক সময়ে করোনার কবলে পড়া ব্যক্তিরা টিকা নিয়েছিলেন কি না, তা জানা যায়নি।
চীনের টিকার ওপর নির্ভরশীল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ সম্প্রতি জানায়, তারা অন্য টিকা ব্যবহার করবে, চীনা টিকা নয়।
সীমান্ত বন্ধ করা থেকে শুরু করে গণহারে করোনা পরীক্ষাসহ বেশ কয়েকটি কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় চীন।