বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মোদির বিরুদ্ধে ১৪ দলের জোট, নেতৃত্বে রাহুল

  •    
  • ২৮ জুলাই, ২০২১ ১৫:০৯

বিরোধীদের অব্যাহত চাপের মুখেও পেগাসাস ইস্যুতে অনুসন্ধান হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকে নজরদারির অভিযোগ খতিয়ে দেখা সম্ভব নয় বলে দাবি দিল্লির।

ইসরায়েলের হ্যাকিং সফটওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে রাজনীতিকদের ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় জোট বেঁধেছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ ভারতের ১৪টি রাজনৈতিক দল।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজধানী দিল্লিতে বুধবার সকালে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ১৪ দলের বৈঠক হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে করণীয় নির্ধারণে আলোচনা করেন নেতারা।

বৈঠকে নেতৃত্ব দেন কংগ্রেস নেতা ও আইনপ্রণেতা রাহুল গান্ধী। উপস্থিত ছিলেন দলটির আরও অনেক শীর্ষ নেতা।

পেগাসাসের নজরদারির সম্ভাব্য শিকার রাহুলও। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো গত সপ্তাহে জানায়, পেগাসাসের ফাঁস হওয়া নজরদারিকৃত ফোনের তালিকায় রয়েছে রাহুলের ব্যবহৃত কমপক্ষে দুটি মোবাইল ফোন নম্বর।

মোদি সরকারের বিরুদ্ধে নজরদারির অভিযোগের বিষয়ে রাহুলের নেতৃত্বে বৈঠকটিতে ছিলেন ক্ষমতাসীন বিজেপির (ভারতীয় জনতা পার্টি) একসময়ের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র শিব সেনার নেতারাও। কট্টর হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের মিল থাকায় বিজেপির জোট সরকারেরও অংশ ছিল শিব সেনা।

ওয়াশিংটন পোস্ট, গার্ডিয়ানসহ ১০ দেশের ১৬টি সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে সম্প্রতি বেরিয়ে আসে ১৪ সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ দেশ-বিদেশের হাজারো রাজনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ফোনে আড়ি পাতার বিস্ফোরক তথ্য।

পেগাসাসের তথ্য অনুযায়ী, তাদের গ্রাহক বিভিন্ন দেশের সরকার। সে হিসেবেই ভারতের বিভিন্ন দলের নেতাদের ফোনে আড়ি পাতার জন্য সন্দেহের তীর নরেন্দ্র মোদির সরকারের বিরুদ্ধে।

এরই মধ্যে পার্লামেন্টে তুমুল বিরোধিতার মুখে পড়েছেন মোদি ও ক্ষমতাসীন দলের অন্য আইনপ্রণেতারা। গোলমালের মুখে পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিতও হয় চলতি সপ্তাহে।

এ অবস্থায় পেগাসাসকাণ্ডে সরকারের বিরুদ্ধে কৌশল গ্রহণে কংগ্রেস, শিব সেনার সঙ্গে যোগ দিয়েছে সিপিআই (কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া), সিপিএম (কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া- মার্ক্সিস্ট), আরজেডি (রাষ্ট্রীয় জনতা দল), এনসিপি (ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি), এএপি (আম আদমি পার্টি), ডিএমকে (দ্রাবিড়া মুন্নেরা কাজাঘাম) ও আঞ্চলিকভাবে প্রভাবশালী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

বৈঠকে অংশ নেয়া অন্যান্য দলের মধ্যে রয়েছে সমাজবাদী পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, মুসলিম লীগ, রিভল্যুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টি, কেরালা কংগ্রেস ও বিরুথালাই চিরুথাইগাল কাচি।

ভারতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিরোধী দলের প্রধান ও কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের কার্যালয়ে বৈঠকটি হয়।

বৈঠকে রাহুল গান্ধী বলেন, পার্লামেন্ট অধিবেশন বিরোধীরা ইচ্ছে করে হতে দিচ্ছে না বলে বিরোধী দলগুলোর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে সরকার। অথচ জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ও তাদের অধিকার নিশ্চিতেই বিষয়টি নিয়ে পার্লামেন্টে ক্ষোভ জানিয়েছেন নেতারা।

পার্লামেন্টের কার্যক্রম কংগ্রেসের কারণে ব্যাহত হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের পরই হয় আজকের বৈঠকটি।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতাদের নিয়ে অনুরূপ একটি বৈঠক করেন রাহুল। এ দিন বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতাদের প্রতিবাদ ও বিতর্কের জেরে নয়বার মুলতবি হয় লোকসভার অধিবেশন।

পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের কাছে চিঠি পাঠায় বিরোধী সাতটি দল। চিঠিতে পেগাসাস কেলেঙ্কারি ও কৃষক আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে পার্লামেন্টে আলোচনায় রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেয়ার অনুরোধ করা হয়।

চিঠিতে স্বাক্ষর ছিল প্রভাবশালী নেতা মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি, শারদ পাওয়ারের এনসিপি, রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি, আকালি দল, ন্যাশনাল কনফারেন্স, সিপিআই ও সিপিএমের।

এতে বলা হয়, ‘আমরা বিভিন্ন দলের সংসদ সদস্য। দেশে অস্থিরতার ঘটনায় দুই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনাকে অবগত করতে এই চিঠি লিখছি এবং আপনার দৃষ্টি কামনা করছি।

‘বিষয় দুটি হলো তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন পূর্ণরূপে বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলন এবং রাজনীতিক, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের ফোনে ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতা।’

চিঠিতে কংগ্রেসের স্বাক্ষর ছিল না। কারণ পেগাসাস ইস্যুতে আলোচনায় বসতে বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ দাবির সঙ্গে একমত নয় দলটি। তবে পার্লামেন্টে অচলাবস্থার কারণে কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করেছে কংগ্রেস।

পেগাসাস ইস্যুতে পার্লামেন্টে আলোচনার দাবি তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসও। তবে বুধবারের বৈঠকে অংশ নেয়নি দলটি।

তবে দাবি নিয়ে দ্বিমত নেই বলে পরে জানান তৃণমূলের আইনপ্রণেতা ডেরেক ও’ ব্রায়ান।

তিনি বলেন, ‘পেগাসাস ইস্যুতে অন্যান্য দলের সঙ্গে সহাবস্থানেই আছে তৃণমূল। আজকের বৈঠকে অংশ না নেয়ার বিষয়ে কংগ্রেসকে আগেই জানিয়েছিল তৃণমূল।’

এদিকে মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেছেন দিল্লি সফররত মমতা। দাবি জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নেতৃত্বে পেগাসাস ইস্যুতে যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখার।

মমতার ভাগনে ও তৃণমূল আইনপ্রণেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও পেগাসাসের সম্ভাব্য নজরদারির শিকার হয়ে থাকতে পারেন বলে ফাঁস হওয়া ফোন নম্বরের তালিকা থেকে জানা গেছে।

বিরোধীদের অব্যাহত চাপের মুখেও পেগাসাস ইস্যুতে অনুসন্ধান হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

ভারতে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকে নজরদারির অভিযোগ খতিয়ে দেখা সম্ভব নয় বলে দাবি দিল্লির।

এ বিভাগের আরো খবর