দলীয় বৈঠকে বচসা, হাতাহাতির পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিজেপি যুব মোর্চার নেতা রাজু সরকার। তিনি পশ্চিমবঙ্গ যুব মোর্চার সহসভাপতি ছিলেন। আলোচিত যুবনেতা রাজুর মৃত্যু নিয়ে নানান গুঞ্জন চলছে দলের ভেতর ও বাইরে।
দলীয় সূত্র জানায়, সোমবার বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে কলকাতা জোনের কর্মসূচি নিয়ে বৈঠক ছিল। সেখানে অন্যদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন যুবনেতা রাজু সরকার। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় রাজু অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অসুস্থ রাজুকে প্রথমে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে ভর্তি করা না গেলে, নেয়া হয় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তখন চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
রাজু সরকারের মৃত্যুর খবর শুনে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক সৌমিত্র খাঁ, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদারের মতো নেতারা হাসপাতালে ছুটে যান।
আচমকা এই মৃত্যুর ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিস্মিত। তিনি বলেন, 'কোনো কারণ ছাড়াই একটা জলজ্যান্ত ছেলে মারা গেল, এটা দুর্ভাগ্যজনক!’
তবে বিজেপির বৈঠকে কথা-কাটাকাটি, হাতাহাতির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘বৈঠকে কথা-কাটাকাটি, গন্ডগোলের বিষয় আমি শুনিনি। কার সঙ্গে ওর কী কথা হয়েছে, তা জানি না।’
দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে সোমবার বৈঠক হয়। তিন জেলার নেতাদের সঙ্গে ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয় যুবনেতাদের। বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন যুবনেতা রাজু সরকার ।
মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন যুবনেতা রাজু। বিজেপি ছেড়ে মুকুল রায় আবার তৃণমূলে ফিরলেও রাজু সরকার রয়ে যান। তাকে নিয়ে বিজেপিতে নানান গুঞ্জন ছিল।
রাজুর মৃত্যু কীভাবে, কেন ঘটেছে তা নিয়ে রীতিমতো রহস্যজট তৈরি হয়েছে। বৈঠকে একটি ডায়েরি নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত হয় বলে জোর দাবি অনেকের। সেখানে হাতাহাতির খবরও মিলেছে। তারপরই রাজু সরকার বুকে ব্যথা অনুভব করেন।
বিজেপির দপ্তরে কি ঘটেছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ টুইট করেছেন। তিনি রাজু সরকারেরর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে দাবি করেছেন, ‘আসল সত্যটা সামনে আসা দরকার।’
কুনাল টুইটে লেখেন, 'বিজেপির যুব সভাপতির মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছি। যোগাযোগ রাখত। দেখা করেছিল, কয়েক দিন আগে। হোয়াটসঅ্যাপ করত। যন্ত্রণা ছিল। বিজেপির দপ্তরে কী ঘটেছিল, নানা রকম কথা আসছে, আশা করি উপস্থিতরা তথ্য গোপন বা বিকৃত করবেন না। আচমকা এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে মানতে কষ্ট হচ্ছে।’