ঈদুল আজহার দিন নামাজের সময় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছে রকেট হামলায় জড়িত সন্দেহে তালেবানের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
দেশটির কর্মকর্তারা রোববার এ তথ্য জানান বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে মাঠে ঈদের নামাজ পড়ছিলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা।
ওই সময় কমপক্ষে তিনটি রকেট কাছে খোলা জায়গায় বিস্ফোরিত হয়।
প্রেসিডেন্ট ঘানি নামাজের পর বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘তালেবান প্রমাণ করেছে, দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।’
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিরওয়াইস স্ট্যানিকজাই মঙ্গলবার বলেন, ‘পিকআপ ট্রাক থেকে তিনটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এগুলোর মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয়নি। হামলায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
জঙ্গি সংগঠন আইএস ওই হামলার দায় স্বীকার করে।
রোববার স্ট্যানিকজাই সাংবাদিকদের জানান, ঈদুল আজহার দিন রকেট হামলায় জড়িত সন্দেহে রাজধানী কাবুলে অভিযান চালিয়ে তালেবানের চার যোদ্ধাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মোমিন নামের তালেবানের এক কমান্ডারও রয়েছেন।
‘রকেট হামলায় মূল সংগঠক এই মোমিনই। এ ছাড়া তারা দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও হামলার সঙ্গে জড়িত।’
গত বছর আশরাফ ঘানি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হওয়ার পর তার অভিষেক অনুষ্ঠানও রকেট হামলার মুখে পড়ে।
ওই হামলার দায়ও সে সময় আইএস নিয়েছিল।
মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব শুরুর আগে সাধারণত যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় তালেবান।
তবে এবার ঈদুল আজহায় এ ধরনের কোনো ঘোষণা সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।
বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছাড়ার শেষ সময়ে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের দখলে নিচ্ছে তালেবান। দেশটির ৮৫ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছে সংগঠনটি।
সহিংসতা শুরুর পর রাজধানী কাবুলে কোনো হামলা করেনি তালেবান। ঈদের দিনই শহরটিতে প্রথম হামলা হলো।
এদিকে ঈদুল আজহার আগ মুহূর্তে আফগানিস্তানে যুদ্ধ বন্ধে দোহায় শুরু হওয়া তালেবান ও আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের শান্তি আলোচনা কোনো চুক্তিতে পৌঁছতে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।
আফগানিস্তানে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বন্ধে শনিবার ৩৪টির মধ্যে ৩১টি প্রদেশে নৈশকালীন কারফিউ জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
কাবুল, পাঞ্জশির ও নানগারহর কারফিউয়ের আওতামুক্ত থাকবে।