দুই দফা পিছিয়ে প্রায় এক বছর পর শুরু হওয়া টোকিও অলিম্পিকস এবার নাকাল হয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস ও গরমে। ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন অলিম্পিকে অংশ কয়েকজন অ্যাথলিট ও আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা। একই সঙ্গে টোকিওর তীব্র গরমে কাহিল পড়ছেন প্রতিযোগীরা।
শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ জুলাই পর্যন্ত অলিম্পিকসের সঙ্গে জড়িত ১২৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিন একজন প্রতিযোগী, দুজন কর্মচারী ও ১৪ জন ঠিকাদারের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
করোনা শনাক্ত হওয়ার পর প্রতিযোগীতা থেকে বাদও পড়েছেন বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়।
জুলাই ও আগস্ট মাসে এমনিতেই টোকিওতে তীব্র গরম পড়ে। একই সঙ্গে আর্দ্র বাতাসে আবহাওয়া আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। এমন গরমে ঝুঁকিতে পড়ছে অ্যাথলেট ও আয়োজন কর্মীদের স্বাস্থ্য।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই ও আগস্টে টোকিওতে তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। কখনও সেটি ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়। বাতাসের আর্দ্রতা থাকে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। এমন সময়ে অলিম্পিকসের আয়োজন নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল।
বিশ্বের সেরা টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচ অলিম্পিকসের এক ম্যাচে অংশ নেয়ার পর টোকিওর আর্দ্রতাকে ‘নির্মম’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। টেনিসের ওয়ার্ল্ড নাম্বার টু দানিল মেদভেদেভ জানিয়েছেন, নিজের শরীর ঠাণ্ডা রাখতে তাকে বহনযোগ্য এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হয়েছে।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও নগর পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক মাকোতো ইয়োকোহারি আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানান, তার গবেষণা অনুযায়ী ১৯৮৬ সালের পরে সবচেয়ে খারাপভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে টোকিও অলিম্পিকস।
তিনি বলেন, ‘হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির কথা বললে এটি ঘটে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার কারণে। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, এখন কোভিডের মৃত্যু ও হার্ট অ্যাটাকের মৃত্যুর উপসর্গ আলাদা করা কঠিন।’
তার মতে জাপানের অন্য শহরে গরমের সময় বাতাস শুকনো থাকে। কিন্তু টোকিওর বেলায় এটি ভিন্ন। এখানে বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি।
তিনি বলেন, ‘যদি অনেকের হার্ট অ্যাটাক হয়, তাহলে তাদের চিকিৎসা কীভাবে হবে সেটি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। আমার মনে হয় না, বিপুল সংখ্যক মানুষের চিকিৎসা করার সক্ষমতা আমাদের আছে।’
সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, অলিম্পিক চলার পুরো সময়জুড়েই গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া থাকবে। তবে পরের সপ্তাহে বৃষ্টি হলে এই তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।