ভারতে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী জোট পাকাতে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে বৈঠক ডাকলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২১ জুলাই শহীদ দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে শরদ পাওয়াদের তিনি একটি বৈঠকের আয়োজনের আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে সূত্রের খবর, সেই উদ্যোগ তৃণমূল কংগ্রেস নিতে চলেছে।
এছাড়া দলের সংসদীয় কমিটির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবার দিল্লিতে সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার বিকেলে দিল্লির চাণক্যপুরীতে বঙ্গভবনে এই বৈঠক হবে। সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। করোনা প্রতিষেধক বণ্টনের বৈষম্য এবং বহু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, ২৮ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক সেরে দিল্লির চাণক্যপুরীর বঙ্গভবনে ফিরে আসবেন মমতা। সেখানেই দুপুর ৩টার দিকে আরেকটি বৈঠক হবে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নির্বাচন কৌশল প্রণয়নকারী প্রশান্ত কিশোরের পরিকল্পনাতেই এই বৈঠকের আয়োজন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এদিকে তৃণমূলের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার, কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম ছাড়াও টিআরএস, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি এবং শিবসেনার নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এবার তিন দিনের দিল্লি সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাক্ষাৎ করবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, এনসিপির প্রধান শারদ পাওয়ারসহ জাতীয় স্তরের রাজনীতিকদের সঙ্গে।
২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে ২১ জুলাই এর মঞ্চ থেকেই বিরোধী দলগুলোকে জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বিজেপি বিরোধী দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল শহীদ দিবসের মঞ্চে। দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে ওই ভার্চুয়াল মঞ্চে উপস্থিত হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছেন নয়টি রাজনৈতিক দলের ১২ জন নেতা।
ওই দিনই ভার্চুয়াল সভা থেকে চিদম্বরম এবং শারদ পাওয়ারদের তিনি আবেদন জানিয়েছিলেন, দিল্লি সফরের সময় যেন একটি বিরোধীদের সম্মিলিত বৈঠক ডাকা হয়, যাতে তিনি সেখানে যোগ দিতে পারেন।
তবে এখন যা খবর তাতে পরিষ্কার যে বিরোধীদের এক ছাতার তলায় আনার এই উদ্যোগ তৃণমূলের পক্ষ থেকেই নেয়া হয়েছে। বৈঠকটিকে মমতার প্রস্তাবিত যুক্তফ্রন্টের একটি প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।