ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ হাইতিতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন এরিয়েল হেনরি। গুপ্তহত্যায় প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোউসে নিহত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর দায়িত্ব নেন তিনি।
শপথ গ্রহণের পর মঙ্গলবার দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি জোরদার ও নির্বাচন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন হেনরি।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট হত্যার জেরে তুমুল অস্থিতিশীল দেশকে অচলাবস্থা থেকে ফেরানোর পথ হিসেবে নতুন সরকারপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে হেনরিকে।
মৃত্যুর কিছুদিন আগে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হেনরিকে দায়িত্ব দেয়ার কথা বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট মোউসে। হেনরির শপথ গ্রহণের ফলে দীর্ঘ বিলম্বিত নির্বাচন আলো দেখবে বলে আশাবাদী হাইতির জনসাধারণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়।
৭ জুলাই মধ্যরাতে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে তাকে হত্যা করে সশস্ত্র বন্দুকধারীরা।
সংবিধান অনুসারে আরেকজন প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব দেয়ার কথা পার্লামেন্টের। কিন্তু ২০১৯ সালের অক্টোবরে নির্বাচন না হওয়া এবং গণ-আন্দোলনের মধ্যেও ডিক্রি জারির মাধ্যমে মোউসে শাসন জারি রাখায় পার্লামেন্টের এ কর্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। সংবিধান সংশোধনী অনুযায়ী পরবর্তী শাসনভার প্রধানমন্ত্রীর।
এ অবস্থায় তখনকার ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ক্লড জোসেফ তাৎক্ষণিক দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং তার হাতে দেশের নেতৃত্বভার বলে জানান। আর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এরিয়েল হেনরির দায়িত্ব নেয়ার কথা থাকলেও তখনও শপথ নেননি তিনি।
এ নিয়ে দেশটিতে ক্ষমতার লড়াই শুরু হলে কয়েকটি রাজনৈতিক দল জোসেফ ল্যাম্বার্টকে নতুন প্রেসিডেন্ট ও হেনরিকে তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি প্রস্তাবে স্বাক্ষর করে।
নতুন সরকার ও হেনরিকে ক্ষমতা হস্তান্তরে সম্মতি দিয়ে জোসেফ ক্লড পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে ফিরে গেছেন।
এদিকে, মোউসে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য নিয়ে ধোঁয়াশা কাটাতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এফবিআইয়ের সঙ্গে কাজ করছে হাইতির নিরাপত্তা বাহিনী।
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই প্রতিবেশী কলম্বিয়ার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা।
উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দরিদ্রতম দেশ হাইতির প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৭ সালে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ৫৩ বছর বয়সী মোউসে।
দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ ছিল তার সরকারের বিরুদ্ধে। রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে হয়েছে ব্যাপক গণ-আন্দোলন।
২০১৯ সালের অক্টোবরে হাইতিতে সাধারণ নির্বাচনের কথা থাকলেও নানা বিতর্কে পিছিয়ে যায় সেটি। ডিক্রি জারি করে দেশের নেতৃত্বভার ধরে রেখেছিলেন মোউসে। সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবের ওপর আসছে সেপ্টেম্বরে গণভোট দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।