বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাহুল গান্ধী, মমতার ভাগনের ফোনেও চলেছে নজরদারি

  •    
  • ২০ জুলাই, ২০২১ ১৪:৫৪

নজরদারির খবর প্রকাশের পর থেকে নম্বর দুটি আর ব্যবহার করছেন না রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, ‘শোবার ঘরের কথাও শুনতে চায় সরকার’। ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপিকে ‘ভারতীয় গোয়েন্দা দল’ বলেও আখ্যায়িত করেছে কংগ্রেস।

ইসরায়েলের ফোন হ্যাকিং সফটওয়্যার পেগাসাসের নজরদারির সম্ভাব্য শিকার হিসেবে নাম এসেছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীর।

এ তালিকায় আরও আছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাগনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতার নির্বাচনবিষয়ক কৌশলবিদ (পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট) প্রশান্ত কিশোর। এমনকি খোদ বিজেপি সরকারের দুই মন্ত্রীর ওপরেও চলেছে নজরদারি।

পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারির অভিযোগ সম্মিলিতভাবে খতিয়ে দেখছে ওয়াশিংটন পোস্টসহ ১০টি দেশের সংবাদমাধ্যম। এর অন্যতম ভারতের দ্য অয়্যার।

দ্য অয়্যারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পেগাসাসের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের এনএসও কোম্পানির ফাঁস হওয়া ডেটাবেসে আছে তিন শতাধিক ভারতীয় টেলিফোন নম্বর।

রাহুল গান্ধীর ব্যবহৃত কমপক্ষে দুটি মোবাইল ফোন নম্বরও পাওয়া গেছে, যেগুলোতে পেগাসাস ব্যবহারের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছে।

ভারতের সাধারণ নির্বাচনের আগে ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত নম্বর দুটিতে আড়ি পাতা হয়।

তবে নজরদারির খবর প্রকাশের পর থেকে নম্বর দুটি আর ব্যবহার করছেন না কংগ্রেস নেতা।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, ‘শোবার ঘরের কথাও শুনতে চায় সরকার’। ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপিকে ‘ভারতীয় গোয়েন্দা দল’ বলেও আখ্যায়িত করেছে কংগ্রেস।

পেগাসাসের নজরদারির সম্ভাব্য শিকারের তালিকায় নাম এসেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাগনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

এছাড়া নজরদারি চলেছে মমতার নির্বাচনি পরামর্শক প্রশান্ত কিশোরের ফোনে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনসহ ভারতের বেশ কয়েকটি নির্বাচনে, বিশেষ করে অঞ্চলভিত্তিক রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে দিতে সক্ষম বলে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় আছেন প্রশান্ত।

ভারতের আলোচিত নির্বাচনবিষয়ক কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোর। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচার কৌশল তৈরি করেন কিশোর। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের কৃতিত্বও দেয়া হয় তাকে।

হ্যাক হওয়া বিভিন্ন ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে দ্য অয়্যার বলছে, চলতি মাসের ১৪ তারিখও প্রশান্ত কিশোরের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল।

সেদিনই ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয় পেতে গান্ধী পরিবার কিশোরের দ্বারস্থ হয় বলে খবর প্রকাশ করে ভারতের গণমাধ্যম।

পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারিতে ছিলেন বর্তমান বিজেপি সরকারেরই দুই মন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল ও অশ্বিনি বৈষ্ণ।

ফাঁস হওয়া তালিকায় প্যাটেলের সঙ্গে তার স্ত্রী, রাঁধুনি ও বাগানের মালিসহ পরিবারের সঙ্গে যুক্ত ১৫ জনের ফোন নম্বর পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে, চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদের স্থলাভিষিক্ত হন বৈষ্ণ। তার ফোনে ২০১৭ সাল থেকে আড়ি পাতা চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে সময় তিনি মন্ত্রী বা পার্লামেন্টের নির্বাচিত আইনপ্রণেতা তো নয়ই, এমনকি বিজেপির সদস্যও ছিলেন না।

তবে নিজের ফোনে আড়ি পাতা ইস্যুতে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী হিসেবে সোমবার পার্লামেন্টে ভারত সরকারের পক্ষেই কথা বলেছেন বৈষ্ণ। তিনি বলেন, পার্লামেন্টে বর্ষাকালীন মৌসুম শুরুর আগের দিন নজরদারির খবর ফাঁস ‘কাকতালীয় নয়’, বরং উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এটি করা হয়েছে।

এ ধরনের অভিযোগের পেছনে কোনো শক্ত প্রমাণ নেই বলেও দাবি করেন বৈষ্ণ।

নজরদারির শিকারের তালিকায় আরও আছে ২০১৯ সালে ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা নারী, তার স্বামী ও পরিবারের আরও দুই সদস্যের ব্যবহৃত ১১টি ফোন নম্বর। গত বছর ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভার সদস্য হন গগৈ।

এ ছাড়া ২০১৮ সালে নিপাহ ভাইরাস নিয়ে কাজ করার সময় ভাইরোলজিস্ট গঙ্গাদ্বীপ কাং; ২০১৯ সালে নির্বাচনবিষয়ক অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিরুদ্ধে মত দেয়া সাবেক নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসার ফোনেও আড়ি পাতা হয়েছিল।

৪০ জনের বেশি ভারতীয় সাংবাদিকের ফোন নম্বরও পাওয়া গেছে এনএসওর ফাঁস হওয়া ডেটাবেজ থেকে।

এদিকে, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করেছে এনএসও। ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, শুধু সরকারি গ্রাহকদেরই সেবা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে মানহানির মামলা করার বিষয়ে ভেবে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

দ্য অয়্যারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, পেগাসাসের মাধ্যমে আইফোন ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করা সবচেয়ে সহজ।

এ বিভাগের আরো খবর