পাকিস্তানে রাষ্ট্রদূতের মেয়ে অপহরণের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি থেকে ওই রাষ্ট্রদূত ও সব কূটনীতিককে প্রত্যাহার করেছে আফগানিস্তান।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে রোববার রাতে এ তথ্য জানায় বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ পদক্ষেপ আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার স্পর্শকাতর এ সময়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক আরও নাজুক করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার পাকিস্তানে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত নাজিব আলিখিলের মেয়ে সিলসিলা আলিখিলকে অপহরণ করা হয়।
কয়েক ঘণ্টা সিলসিলাকে বন্দি রাখার পর দুষ্কৃতকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়। রাষ্ট্রদূতের মেয়ের দেহে আঘাত ও রশির দাগ ছিল।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত হুমকি পুরোপুরি না কাটা পর্যন্ত কাবুলে থাকবেন রাষ্ট্রদূত ও জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকরা।
এ সময়ের মধ্যে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
শনিবার আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, অপহরণের সময় ইসলামাবাদে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন সিলসিলা। মুক্তির পর তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ টুইটবার্তায় বলেন, ‘আফগান রাষ্ট্রদূতের মেয়ে অপহরণ ও বন্দি অবস্থায় তাকে নির্যাতন আমাদের দেশের মর্যাদায় আঘাত হেনেছে। আমাদের জাতীয় মর্যাদাকে নির্যাতন করা হয়েছে।’
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আফগানিস্তানের এক প্রতিনিধিদল পাকিস্তানে পাঠানো হচ্ছে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
রাষ্ট্রদূতের মেয়ে অপহরণের ঘটনাকে অগ্রাধিকারে রেখেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
ইমরান খান ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন বলে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ জানান।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানকে অন্যতম প্রধান সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রতিবেশী দুই দেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শীতল সম্পর্ক চলছে।
পাকিস্তান তালেবান যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ আফগানিস্তানের।
অন্যদিকে পাকিস্তানের অভিযোগ, দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে সশস্ত্র বিভিন্ন সংগঠনকে নিজের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দিচ্ছে আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বলেও সম্প্রতি মন্তব্য করেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।
আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জবাবে ইমরান খান বলেছিলেন, ‘তালেবানকে শান্তি আলোচনায় বসাতে পাকিস্তানের মতো কোনো দেশ এত পরিশ্রম করেনি।
‘আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে তালেবানকে শান্তি আলোচনায় রাজি করাতে অনেক উদ্যোগ নিয়েছি।’
‘আফগানিস্তানে এখন যা হচ্ছে, তার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করা খুবই অন্যায়।’