ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে ৬০ বছরের ভয়াবহতম বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৭০ জনে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানি ও বেলজিয়াম। নিখোঁজ হাজারো মানুষ।
শুধু জার্মানিতেই মৃত্যু হয়েছে চারজন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ কমপক্ষে ১৪৩ জনের। বেলজিয়ামে এ সংখ্যা ২৭।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ ও সুইজারল্যান্ডের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পানি কমতে শুরু করায় বন্যাকবলিত বিপুলসংখ্যক এলাকায় শুরু হয়েছে ধ্বংসস্তুপ পরিস্কারের কর্মযজ্ঞ। স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
নিখোঁজদের সন্ধানে দিনরাত কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। তাদের শঙ্কা, আরও বাড়তে পারে প্রাণহানি।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমের বন শহরে স্টাইনবাশটাল বাঁধে ভাঙনের শঙ্কাও জোরালো হয়েছে। উজান এলাকাগুলো থেকে এরই মধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বাসিন্দাদের। এ ছাড়া ডুসেলডর্ফের কাছে হাইন্সবার্গের একটি বাঁধ শুক্রবার রাতে ভেঙে পড়ায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে কয়েক শ মানুষকে।
বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন ইউরোপের নেতারা। বিশেষজ্ঞদের আভাস, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে আরও অতিবৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। শিল্পবিপ্লবের পর বৈশ্বিক উষ্ণতা এক দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানির নর্থ রাইন-ওয়েস্টফ্যালিয়া, রাইনল্যান্ড-প্যালেটিনেট ও সারল্যান্ড প্রদেশ। শুরুতে এক হাজার ৩০০ মানুষ নিখোঁজ বলা হলেও পরে অনেকেরই খোঁজ মিলেছে।
বেলজিয়ামের ১০টি প্রদেশের মধ্যে চারটিতে বন্যাপরবর্তী সহযোগিতা, উদ্ধারকাজ ও দুর্গতদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
দেশটিতে নিখোঁজ ১০৩ জন। লিজ শহরে উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে প্রতিবেশী ফ্রান্স, ইতালি ও অস্ট্রিয়া।
নেদারল্যান্ডসের লিম্বার্গ প্রদেশে বন্যার পানি বাড়তে থাকার মুখে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। তবে ম্যাস্ট্রিচ শহরে পানি কমতে থাকায় শুক্রবার থেকে ফিরছেন বাসিন্দারা।
অতিবৃষ্টির পর এ পর্যায়ে ফুলেফেঁপে উঠছে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন হ্রদ ও নদী। রাজধানী বার্ন হয়ে যাওয়া নদীর তীর উপচে শুক্রবার তলিয়ে গেছে আশপাশের এলাকাগুলো। লেক লুসার্নেতের পানি ঢুকেছে শহরটিতে। ব্যাসেল শহরের বাসিন্দাদের রাইন নদী থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় পাঁচ কোটি ইউরোর তহবিল ঘোষণা করেছেন লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী।