দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার আনুষ্ঠানিক অনুমতি দিয়েছে সৌদি আরব।
সৌদি রাজতন্ত্রের এই সংস্কারকে অনেকে বেশ স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২০১৭ সালে ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার মধ্য দিয়ে সৌদি আরবের কার্যত প্রধান শাসক হন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। এরপর থেকে সৌদি সমাজব্যবস্থায় বৈপ্লবিক কিছু পরিবর্তন আনেন তিনি।
তেলের ওপর সৌদি আরবের নির্ভরতা কমাতে ও ধর্মের ভূমিকা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার আনেন এমবিএস।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ফেডারেশন অফ সৌদি চেম্বার্সের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কর্মদিবসে নামাজের সময়ও সব ধরনের দোকানপাটসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু থাকবে।’
করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে নামাজের সময় বন্ধ দোকানের সামনে ক্রেতাদের লম্বা লাইন ও ভিড় এড়ানো যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নামাজের সময় দোকান খোলা রাখা নিয়ে ২০১৯ সালেই সৌদি সরকার নির্দেশনা জারি করে। এবার এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিল ফেডারেশন অফ সৌদি চেম্বার্স। এ উদ্যোগের ফলে দেশটিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা যাবে।
সৌদি সরকারের নির্দেশনায় নামাজের সময়ও দোকান খোলা রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে সৌদি নাগরিকরা সে সময় বিভ্রান্তিতে পড়েন। ২০১৯ সালের ওই পদক্ষেপকে বিধিনিষেধ শিথিলের ট্রায়াল হিসেবে দেখেন অনেকে।
ওই নির্দেশনার পর থেকে সৌদি আরবের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিশেষ করে রাজধানী রিয়াদে কিছু রেস্তোরাঁ, সুপার মার্কেট ও অন্যান্য দোকানপাট সব সময়ই খোলা থাকে।
এর আগে সৌদি আরবে ফজরসহ পাঁচ ওয়াক্তের নামাজের সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হতো।
নামাজের সময় বাধ্যতামূলক শাটডাউনের কারণে দিনে প্রায় দুই ঘণ্টার মতো সময় কাজ থেকে বিরত থাকতে হয় সৌদি কর্মীদের।
২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যায় জড়িতের তালিকায় এমবিসের নাম উঠে আসে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তাকে নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। তা সত্ত্বেও ‘মধ্যপন্থি’ ইসলামের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জোর চেষ্টায় রয়েছেন এমবিএস।
তার হাত ধরে নারীদের গাড়ি চালানো, স্টেডিয়াম ও সিনেমা হলে যাওয়াসহ বেশ কিছু পরিবর্তন দেখছে সৌদি সমাজ।