আফগান সীমান্তের কাছে গত মাসে ইসলামপন্থি সশস্ত্র যোদ্ধাদের অপহরণ করা পাকিস্তানের পাঁচ টেলিকমিউনিকেশন কর্মীকে উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুক্রবার এ তথ্য জানায় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বেশ কয়েক বছরের সহিংসতা শেষে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত অপেক্ষাকৃত শান্ত ছিল।
তবে সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো তাদের সেনা প্রত্যাহার-প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে তালেবান দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।
সম্প্রতি ইরান ও পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান। এ ছাড়া আফগানিস্তানের ৮৫ শতাংশ অঞ্চল দখলের দাবি সংগঠনটির। চলতি বছরের ২৬ জুন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পশতুন সম্প্রদায়-অধ্যুষিত কুররাম জেলায় মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানোর সময় ১৬ পাকিস্তানিকে অপহরণ করা হয়।
কোনো সংগঠন এখন পর্যন্ত ওই অপহরণের দায় নেয়নি।
পরে ১০ কর্মীকে ছেড়ে দেয়া হলেও একজনের শিরশ্ছেদ করা হয়। আর বাকি পাঁচজনের ক্ষেত্রে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাঁচ কর্মী উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনীকে বেশ কিছু গোয়েন্দা অভিযান চালাতে হয়।’
অপহরণ করা পাঁচ কর্মীকে বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা হয়। তবে অপহরণের পেছনে কোন সংগঠনের হাত থাকতে পারে, এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।
তবে দেশটির সেনাবাহিনী জানায়, অপহৃতদের উদ্ধারে স্থানীয়রা নিরাপত্তা বাহিনীকে পুরোপুরি সহযোগিতা করেছে।
পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায় সম্প্রতি পাকিস্তানি তালেবানের হাত থেকে রক্ষায় দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ নিয়ে সমাবেশও করে তারা।
পাকিস্তানি তালেবান কয়েক বছর আগে অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে জোট গঠন করে।
ওই জোট পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তার ওপর সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু হামলা চালায়। এ ছাড়া তারা চাঁদাবাজি ও অপহরণের ঘটনাও ঘটায়।
৫ জুলাই সীমান্তের কাছে এক চেকপোস্টে তিন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করে সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা।
ওই হত্যার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানি তালেবান বা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বলা হয়, আফগানিস্তানের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিতে পারে পাকিস্তানি সশস্ত্র যোদ্ধারা।
এ ছাড়া তালেবান আফগান সরকারের কাছ থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা দখলে নেয়ার পর আগের চেয়ে এখন বেশি সক্রিয় হতে পারে টিটিপি।