করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্র সরকার পর্যাপ্ত টিকা দিচ্ছে না বলে আবারও অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘টিকা দেয়ার কাজ সবচেয়ে ভালো হয়েছে বাংলায়। কিন্তু আমরা টিকা পাচ্ছিনা। বিজেপির রাজ্যকে বেশি টিকা দেয়া হচ্ছে।
‘বাংলাকে ত্রাণের টাকা দেবে না, প্রাপ্য টাকা দেবে না, টিকা দেবে না, এটা অন্যায়। পরিকল্পনা করে বাংলার বদনাম করা হচ্ছে। বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আজও টিকার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। হয়ত উত্তর পাব না। কিন্তু আমার দায়িত্ব জানানো। তাই চিঠি লিখে জানালাম। পরেও জানাব।’
এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে ৮০০ থেকে ৯০০ মধ্যে রয়েছে । আরও কমানোর চেষ্টা করছি। শনাক্তের হার কমে দাঁড়িয়েছে এক দশমিক আট শতাংশে । ৯৮ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠছেন। ইতোমধ্যে আড়াই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। এক দশমিক আট কোটি মানুষকে টিকার দুটি ডোজ দেয়া হয়েছে।
‘রাজ্যে মোট ১৪ কোটি টিকার প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত পেয়েছি মাত্র দুই দশমিক ১২ কোটি ডোজ। নিজেরা ৬০ কোটি টাকা খরচ করে ৮ লাখ টিকা কিনেছি। চাইলে আমরা দশ লাখ মানুষকে টিকা দিতে পারি। কিন্তু আমাদের কাছে টিকাই আসছে না।’
টিকা দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশংসা করার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘সকলেই জানে, উত্তরপ্রদেশে কী ঘটনা ঘটেছে। কোভিডে মরা মানুষের দেহ গঙ্গায় ভেসে এসেছে। গঙ্গার পবিত্র জল দূষিত হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে রাজ্যের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিবেদন দেখিয়ে বিচ্ছিন্ন সাতটি কেন্দ্রে ভোট করানোর এখনই উপযুক্ত সময় বলে সওয়াল করেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী, আইন অনুযায়ী, ভোটের ফল প্রকাশের ছয় মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করাতে হবে। আমরা বেআইনি, অসাংবিধানিক কিছুই চাইছি না। কিন্তু বিজেপি জানে ওরা প্রতিটায় হারবে। তাই ভোট করাতে চাইছে না।’
যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে পৌরসভা নির্বাচনের চাপ দেয়া হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, শাসকদল পৌরসভা নির্বাচন না করিয়ে, প্রশাসক বসিয়ে রেখেছে।
উপনির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করতে আজই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে তৃণমূলের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাজ্যকে চিঠি দিয়ে কঠোরভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিজেপি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা অবনতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে উপনির্বাচন নির্বাচন কমিশনের হাতে ছেড়ে দিলেও তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ কেন্দ্র সরকার আর বিজেপি ইচ্ছা করে উপনির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে, যাতে রাজ্যের শাসক দল বিড়ম্বনায় পড়ে।