বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কংগ্রেসের হাত ধরবেন কী প্রশান্ত কিশোর! জল্পনা তুঙ্গে

  •    
  • ১৪ জুলাই, ২০২১ ২২:৫৫

মঙ্গলবারের বৈঠকের পর তাই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হঠাতে কংগ্রেসের সঙ্গে হাতে হাত রাখতে পারেন পিকে, এই জল্পনাতেই শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। পাশাপাশি সূত্রের দাবি, ‘বড় কোনও সিদ্ধান্ত’ হয়েছে ওই বৈঠকে। যা লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেসে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

২০১৪’র লোকসভা নির্বাচনের পর দেশের রাজনীতির ময়দান থেকে ক্রমশ পিছু হাঁটছে শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস দল। স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষে দশকের পর দশক জুড়ে শাসন ক্ষমতার রাশ নিজেদের দখলে রাখার পর বর্তমান সময়ে সংসদে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও ধরে রাখতে পারেনি কংগ্রেস। যে মর্যাদা ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন লোকসভার মোট সদস্যের ১০ শতাংশ-এর একটি দল।

অর্থাৎ, ৫৪৩ সদস্যের লোকসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে প্রয়োজন ৫৫ সাংসদ। যা এখন কংগ্রেসের নেই। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেসকে চাঙ্গা করার আর একটা চেষ্টা শুরু করেছে নেহেরু-গান্ধী পরিবার।

২০২৪’র লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা যায় কিনা সেটাই এখন চূড়ান্ত লক্ষ্য সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বাড়িতে মঙ্গলবার বৈঠক করেছেন সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। বৈঠকের মধ্যমনি ছিলেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর এই প্রশান্ত কিশোরকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতাদের একাংশ৷

স্বাভাবিকভাবেই মঙ্গলবারের বৈঠক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে দেশের রাজনৈতিক মহলে। সেই বৈঠককে শুধুমাত্র আসন্ন উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব বা মনিপুরের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে বৈঠক বলে মানতে নারাজ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে সেখানকার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের উপদেষ্টা তিনি। আবার বিজেপি আটকানোয় যে তিনি সফল, সে প্রমাণও সদ্যই পাওয়া গেছে পশ্চিমবঙ্গে। সম্প্রতি শারদ পাওয়ারসহ বিভিন্ন বিরোধী নেতার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন প্রশান্ত কিশোর।

মঙ্গলবারের বৈঠকের পর তাই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হঠাতে কংগ্রেসের সঙ্গে হাতে হাত রাখতে পারেন পিকে, এই জল্পনাতেই শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। পাশাপাশি সূত্রের দাবি, ‘বড় কোনও সিদ্ধান্ত’ হয়েছে ওই বৈঠকে। যা লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেসে যোগদানের সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের পর পিকে জানিয়েছিলেন, তিনি যা করছেন তা আর করতে চাইছেন না। সেখান থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে পিকের প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনার পারদ চড়েছিল। এ বার ৩ গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পর সেই জল্পনা আরও জোরালো হচ্ছে।

এর আগেও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে ছিলেন প্রশান্ত। বিহারের নির্বাচনে নীতীশ কুমারকে জেতানোর পর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সংযুক্ত জনতা দলে যোগ দেন তিনি। কিন্তু বেশি দিন নীতীশের নেতৃত্বে থাকেননি পিকে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে নীতীশ কুমারের সমর্থনের বিরুদ্ধে কড়া নিন্দায় সরব হন প্রশান্ত কিশোর। তারপরেই ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি দল থেকে প্রশান্তকে বহিষ্কার করেন নীতীশ কুমার। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে পিকে কয়েকমাস আগেই জানিয়েছিলেন, সক্রিয় রাজনীতিতে তিনি ব্যর্থ। তাই পিছনে ঘুরে গিয়ে ফের নতুন কিছু শুরু করতে চান তিনি।

সেই শুরুটা কি কংগ্রেস অধ্যায়? এই নিয়ে জল্পনা বাড়ছে। কারণ, এর আগে কংগ্রেসের হয়ে ভোটকুশলীর কাজ করেছেন তিনি। এখনও করছেন। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে৷ এই অবস্থায় জাতীয় রাজনীতিতে হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া কংগ্রেস৷ আর সেই তাগিদ এতটাই যে শেষ পর্যন্ত ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের শরণাপন্ন হতে হলো রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধীদের৷

এখন কংগ্রেসের এতটাই কোণঠাসা অবস্থা, জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের গুরুত্ব বজায় রাখতে গেলে প্রশান্ত কিশোরের মতো পরীক্ষিত এবং সফল ভোট কুশলীকেই সবথেকে বেশি প্রয়োজন তাদের৷

সূত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৪-এ বিজেপি বিরোধী জোটের রূপরেখা কী হবে এবং সেই জোটে কংগ্রেসের কী ভূমিকা হতে পারে, সেটাই ছিল পিকে এবং গান্ধীদের মধ্যে বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয়৷

শুধু তাই নয়, ঘুরে দাঁড়াতে গেলে কংগ্রেসের কী করণীয়, বৈঠকে প্রশান্ত কিশোরের কাছ থেকে সোনিয়া - প্রিয়াঙ্কারা সেই পরামর্শও চান বলে সূত্রের খবর৷ কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ তেইশ জন নেতাও এর আগে সোনিয়া গান্ধীকে লেখা চিঠিতে দাবি করেছিলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত সংগঠনকে শক্তিশালী করা হচ্ছে, কংগ্রেসের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়৷

কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বও আশাবাদী, এবার তাদের দলেও এরকমই কিছু হতে চলেছে৷

খুব শিগগিরই কংগ্রেসে বড়সড় সাংগঠনিক রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে৷ দলের পরবর্তী সভাপতি কে হবেন, বহু প্রতীক্ষিত সেই প্রশ্নের উত্তরও সম্ভবত মিলতে চলেছে৷ বিক্ষুব্ধ ২৩ জন নেতাও অভিযোগ করেছিলেন, শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে ধোঁয়াশার জন্যই আরও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন নিচুতলার নেতা কর্মীরা৷

আর এই সমস্ত বিভ্রান্তি কাটাতেই এবার প্রশান্ত কিশোরকে ঘিরে আশায় বুক বাঁধছে কংগ্রেস৷ তবে বিষয়টি এতটা সহজও হবে না৷ প্রশান্ত কিশোরের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, কংগ্রেস নিয়ে পিকে-র মনোভাব এখনও খুব একটা ইতিবাচক নয়৷ শেষ পর্যন্ত সত্যিই যদি তিনি কংগ্রেসের ‘পরামর্শদাতা’ বা অন্য কোনও দায়িত্ব নেন, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের মতোই কংগ্রেসেও তাকে নিজের শর্তে কাজ করতে দিতে হবে৷ তবেই রাজি হবেন তিনি৷

এ বিভাগের আরো খবর