মুকুল রায়কে পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান মনোনীত করার প্রতিবাদে বিধানসভার ৮টি স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিজেপি বিধায়করা।
স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, বিজেপির মিহির গোস্বামী, কৃষ্ণ কল্যাণী, নিখিল রঞ্জন দে, বিষ্ণুপদ শর্মা, দীপক বর্মন, অশোক কীর্তনীয়া ও আনন্দময় বর্মন।
বিজেপি বিধায়কদের গণইস্তফা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রীতি অনুযায়ী বিরোধী দলের প্রতিনিধিকে পিএসি চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়। সেই নিয়ম মানা হয়নি। আমরা ঠিক করেছি, কোনো পদে থাকব না।’
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিজেপি বিধায়করা ইস্তফাপত্র দিলে, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন পদত্যাগ করছেন? মানুষের কাজ করার জন্য আপনাদের থাকা উচিত।’
বিজেপি বিধায়করা স্পিকারকে জানান, ‘এটা পরিষদীয় দলের সিদ্ধান্ত।’
এরপর তারা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। আগেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইট করে জানিয়েছিলেন, ‘বিজেপি বিধায়করা রাজভবন আসছেন।’
শুভেন্দুর রাজভবন যাওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা লোকসভার সৌগত রায় বলেন, ‘নিয়ম মেনে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্পিকার। এক্ষেত্রে রাজ্যপালের কিছু করার নেই।’
মুকুল রায়কে বিধানসভার পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত করার দিন শুক্রবার বিজেপি বিধায়করা প্রতিবাদ করে বিধানসভা কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমাদের মোট ৮ জন বিধায়ককে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছিলেন স্পিকার। পিএসি চেয়ারম্যান নিয়ে রাজনীতি করার জন্য সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেছি।’
ঘটনা হলো, মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হয়ে বিজেপি ছেড়ে আবার নিজের পুরনো দল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যা নিয়ে তুমুল বিজেপি বিরোধিতার মুখে পড়েছেন তিনি। অনেকে এ প্রসঙ্গে মানস ভুঁইয়াকে টেনে আনছেন। তিনিও ২০১৬ সালে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৃণমূলের পক্ষে পিএসির চেয়ারম্যান পদে বসে ছিলেন। তবে মুকুল আর মানসের বিষয়টি এক করতে রাজি নয় বিজেপি।
সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই রাজ্যের শাসক দল কোন সংসদীয় প্রথা মানে না। আর শুভেন্দু তো তখন ওই সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। তিনিও তখন এই অনৈতিক কাজের কোনো প্রতিবাদ করেননি।’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘আমি ভারতবর্ষের পিএসসি চেয়ারম্যান। বিরোধীদের পিএসি চেয়ারম্যান করাটাই রেওয়াজ। এটা ইন্দিরা গান্ধী করেছিলেন। সব রাজ্যে এটাই হয়।’