ক্লাস সেভেনের সমাজবিদ্যা বইয়ে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের তালিকায় মালালা ইউসুফজাইর ছবি ছাপায় তা বাজেয়াপ্ত করেছে পাঞ্জাব কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সটবুক বোর্ড (পিসিটিবি)।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত বইটি সোমবার জব্দ করা হয় বলে ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সমাজবিদ্যা বইটির ৩৩ নম্বর পৃষ্ঠায় পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে দেশটির জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জাতীয় কবি আল্লামা ইকবাল, স্যার সৈয়দ আহমেদ খান, লিয়াকত আলী খানের ছবি রয়েছে।
এ ছাড়া রয়েছে জনহিতৈষী আবদুল সাত্তার ইধি, বেগম রানা লিয়াকত আলী খান, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের নায়ক মেজর আজিজ ভাট্টি ও অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাইর ছবি।
পাকিস্তানের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এরই মধ্যে ক্লাস সেভেনের বইটি সরবরাহ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র ডনকে জানিয়েছে, সোমবার পাঞ্জাবের বিভিন্ন শহরে বইয়ের দোকানে অভিযান চালায় পিসিটিবি, পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা।
ওই সময় সমরনায়ক আজিজ ভাট্টির ছবির পাশে মালালার ছবি থাকা সমাজবিদ্যা বইটির সব কপি জব্দ করা হয়।
সোমবার পাঞ্জাবের গুলবার্গ শহরের মিনি মার্কেটে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসে প্রথমে অভিযান চালান একদল কর্মকর্তা। তারা সমাজবিদ্যা বইয়ের সব কপি সেখান থেকে জব্দ করেন।
ওই সময় অক্সফোর্ড প্রেসকে ওই কর্মকর্তারা একটি চিঠিও দেন। তাতে বলা হয়, বইটি প্রকাশে অনাপত্তিপত্র দেয়া হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকাশকদের একজন বলেন, ২০১৯ সালে বইটি পিসিটিবির কাছে পর্যালোচনার জন্য জমা দেয়া হয়। পাশাপাশি অনাপত্তিপত্রও চাওয়া হয়।
পর্যালোচনা শেষে বইটি প্রকাশে অনুমোদন দেয়নি পাঞ্জাব টেক্সটবুক বোর্ড।
তিনি বলেন, ‘অনাপত্তিপত্র না দেয়ার পরও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস বইটি ছাপায়।’
তিনি জানান, পিসিটিবির কর্মকর্তা, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তারা তার দোকানে আসেন। বইটি সম্পর্কে জানতে চান। এটি জব্দের বিষয়ে নির্দেশ পড়ে শোনান তারা।
এ বিষয়ে পিসিটিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মাজহারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে পিসিটিবির মুখপাত্র বলেন, অনাপত্তিপত্র ছাড়াই প্রকাশ করায় বইটি জব্দ করা হয়েছে।
গত বছর দ্বিজাতিতত্ত্বের বিরোধিতা করায় এবং ‘অনৈতিক ও বেআইনি’ বিবেচনায় ১০০-এর মতো টেক্সটবই নিষিদ্ধ করে পিসিটিবি।
নারীশিক্ষা প্রসারে কাজ করা ১৫ বছর বয়সী মালালাকে ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর তালেবানের এক সদস্য গুলি করে।
২০১৪ সালে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে শান্তিতে নোবেল পান তিনি।