আফগানিস্তান থেকে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সব সেনা সেপ্টেম্বরে চলে যাওয়ার পরও কাবুলের প্রধান বিমানবন্দর পাহারায় নিজেদের কয়েকজন সেনা রেখে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে আঙ্কারা।
আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দেশটিকে হুঁশিয়ার করেছে তালেবান।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার তুরস্ককে হুঁশিয়ার করা হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক, রাজনৈতিক ও লজিস্টিক্যাল সহযোগিতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে তুরস্কের।
আলোচনায় কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনা ও রক্ষায় নিজেদের সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব দেয় আঙ্কারা।
তুরস্কের পক্ষ থেকে বলা হয়, আফগানিস্তানে কূটনৈতিক মিশন চলমান রাখতে ওই বিমানবন্দর চালু রাখা দরকার।
তুরস্কের এ পরিকল্পনার বিষয়ে তালেবান এক বিবৃতিতে বলে, ‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান তুরস্কের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছে।
‘তুরস্কের কর্মকর্তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় ব্যর্থ হলে এবং আমাদের দেশ দখলের প্রক্রিয়া জারি রাখলে ইসলামিক আমিরাত তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।’
তালেবান আরও জানায়, এ ক্ষেত্রে পরিণতির দায় তাদের নিতে হবে, যারা আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে।
সোমবার বিকেলে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার সাংবাদিকদের বলেন, কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর পরিচালনায় কয়েকটি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একমত হয়েছে তুরস্ক। এ বিষয়ে চুক্তির প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, ‘সব দেশই বলছে, বিমানবন্দরটি চালু রাখা প্রয়োজন। এটি বন্ধ থাকলে আফগানিস্তান থেকে দেশগুলোকে কূটনৈতিক মিশন গোটাতে হবে।’
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা প্রত্যাহারের আগেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা শেষ করতে হবে বলে তুরস্কের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তাদের ভাষ্য, ‘কাবুল বিমানবন্দরটি ঘিরে আমরা মনে করি চুক্তির প্রয়োজন রয়েছে। আফগান জনগণের পক্ষে আমাদের অবস্থান।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কঠোর হাতে আফগানিস্তান শাসন করে তালেবান।
যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ২০০১ সালে তালেবানকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির ক্ষমতা থেকে সরায়।
এরপর থেকে গত ২০ বছর ধরে পশ্চিমা দেশ-সমর্থিত আফগানিস্তান সরকারকে পতনের মাধ্যমে দেশটিতে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই করছে তালেবান।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি প্রত্যাহারের লক্ষ্য নিয়ে মাসখানেক ধরে বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান।
শুক্রবার তালেবান দাবি করে, দেশটির ৮৫ শতাংশ এলাকা তাদের দখলে চলে গেছে।