ইরাকের নাসিরিয়া শহরে আল-হোসেন হাসপাতালের করোনাভাইরাস আইসোলেশন ওয়ার্ডে আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে।
এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ৭০ জন।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। তবে অক্সিজেন ট্যাংকে বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে।
দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখনও চলছে সন্ধান ও উদ্ধার অভিযান।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-খাদেমি।
হাসপাতাল ভবনের বাইরে বিক্ষোভ করছেন রোগীর স্বজনরা। পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ও পুলিশের দুটি গাড়িতে বিক্ষুব্ধরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
হাসপাতালটিতে মাত্র তিন মাস আগে নির্মিত নতুন এই ওয়ার্ডটিতে ৭০টি শয্যা ছিল। হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, করোনাভাইরাস ওয়ার্ডের ভেতর থেকে শক্তিশালী বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। এরপরই খুব দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ইরাকের পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ আল-হালবুসি লিখেছেন, ‘ইরাকের জনগণের জীবনের নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রমাণ এই আগুন। সর্বনাশা এই ব্যর্থতায় ইতি টানার সময় এসে গেছে।’
চলতি বছরের এপ্রিলে রাজধানী বাগদাদের একটি হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংক বিস্ফোরণে প্রাণ যায় কমপক্ষে ৮২ জনের। ওই ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেছিলেন ইরাকের তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসান আল-তামিমি।
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের অনেক দেশের মতোই ইরাকের স্বাস্থ্য খাতও পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। কয়েক বছরের যুদ্ধ, প্রশাসনিক অবহেলা আর দুর্নীতিতে আগে থেকেই জর্জরিত ছিল দেশটি।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুসারে, ইরাকে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১৭ হাজারের বেশি মানুষের, শনাক্তের সংখ্যা ১৪ লাখ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, দেশটির চার কোটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে মাত্র ১০ লাখের মতো মানুষ মাত্র এক ডোজ করোনা প্রতিরোধী টিকা নিয়েছেন।