খাদ্য ঘাটতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উচ্চ মূল্য ও কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে কিউবার হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে।
গত তিন দশকে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে এত বড় গণবিক্ষোভ দেখা যায়নি।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় রোববার সকালে কিউবার পশ্চিমাঞ্চলীয় সান অ্যান্তোনিও দি লস বেনোস ও পূর্বাঞ্চলীয় পালমা সোরিয়ানো শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। দুই জায়গাতেই হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়।
কিউবার লাখ লাখ মানুষের হাতে এখন ইন্টারনেট সংযোগ থাকা মোবাইল রয়েছে। ফলে দুই শহরের বিক্ষোভের খবর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি।
দুপুরের মধ্যে ‘জন্মভূমি ও জীবন’ এবং ‘স্বাধীনতা’ স্লোগান দিয়ে হাজার হাজার মানুষ কিউবার রাজধানী হাভানায় বিক্ষোভ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চল্লিশোর্ধ্ব এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘ক্ষুধা, ওষুধের ঘাটতি, বিদ্যুৎহীনতার কারণে আমি এখানে এসেছি।
‘আমি পুরো ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। সরকার ও বহুদলীয় নির্বাচনের পরিবর্তন দরকার। আমি কমিউনিজমের অবসান চাই।’
বিক্ষোভের একপর্যায়ে বেশ কয়েকজন প্রতিবাদকারীকে আটক করে কিউবা পুলিশ।
ওই সময় তরুণরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জবাবে পেপার স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ব্যাপক লাঠিচার্জও হয়।
দুই হাতে পাথর নিয়ে ১৭ বছর বয়সী ইয়ুসনিয়েল পেরেজ বলে, ‘আমরা ক্ষুধার্ত ও দরিদ্র। এ জন্য বিক্ষোভে অংশ নিয়েছি। আমাদের ঘরে খাবার নেই, কিছুই নেই।’
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-কেনেল বেলা ৩টার দিকে টেলিভিশনে হাজির হয়ে বলেন, ‘দেশের অস্থিতিশীলতা বৈপ্লবিকভাবে থামানো হবে।
‘আমরা কিউবার সব বিপ্লবী, কমিউনিস্টকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানাচ্ছি।’
রোববার সারা দিন ধরে হাভানার রাস্তায় ইঁদুর-বিড়ালের খেলা দেখা যায়।
তরুণ সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা একদিকে হাভানার প্রধান প্রধান এলাকা দখল করার চেষ্টা করে, অন্যদিকে সরকার সমর্থক, পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের দখলে বাধা দেয়।
৫২ বছর বয়সী আইলিন গুয়েরেরো হাজার হাজার সরকার সমর্থকদের একজন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অর্জনের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছি। আমরা যদি কমিউনিস্ট নাও হই, আমরা দেশপ্রেমিক।’
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের টাকা খেয়ে রাস্তায় নেমেছে বলে অভিযোগ সরকার সমর্থকদের।
তাদের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর ‘গণতন্ত্র উন্নয়নের’ স্বার্থে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার কিউবায় ব্যয় করে।