উত্তর প্রদেশ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নীতি ২০২১-২০৩০-এর খসড়া বিল প্রকাশ্যে আনলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে খসড়া বিল প্রকাশ্যে এনে যোগীর দাবি, ২০২৬ সালের মধ্যে জন্মহার ১ দশমিক ৯-এ নামিয়ে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি।
যোগী জানিয়েছেন, সমাজের বিভিন্ন বিভাগকে মাথায় রেখেই এই নীতি বাস্তবায়নে কাজ করবে তার সরকার। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্যে জন্মহার প্রতি হাজারে ২ দশমিক ৭। নয়া নীতি ঘোষণার অনুষ্ঠানে যোগী বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য দুই সন্তানের মধ্যে সময়ের একটি নির্দিষ্ট ব্যবধান থাকা জরুরি।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নীতি সমর্থন করে মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফাড়নবিশ দাবি করেছেন গোটা দেশে এ ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন চালু করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই নীতির মাধ্যমে শুধু জন্মনিয়ন্ত্রণ নয়, তার সঙ্গে মানুষের কাছে সুবিধা পৌঁছে দেয়াও সহজ হবে। আসন্ন উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে চলেছে এই জন্মনিয়ন্ত্রণ বিল।
যোগী আদিত্যনাথের সরকার এই বিলে সাফ জানিয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তির দুয়ের বেশি সন্তান থাকে, তাহলে তিনি স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। সরকারি চাকরি বা অন্যান্য সুবিধা থেকেও তিনি বঞ্চিত হবেন। সরকারি চাকরিজীবী হলে তার পদোন্নতি হবে না। পাশাপাশি এই বিলে বলা হয়েছে, দুই সন্তান থাকলে চাকরিজীবী কোনো ব্যক্তি দুইবার ইনক্রিমেন্ট পাবেন। তার সঙ্গে পুরো বেতন-সহ পিতৃত্বকালীন ছুটিও পাবেন। ন্যাশনাল পেনশন স্কিমেও বাড়তি টাকা মিলবে নিয়ম মানলে।
যদিও এই বিলকে ‘রাজনীতির অ্যাজেন্ডা’ হিসেবেই দেখছে কংগ্রেস দল। উত্তর প্রদেশের প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ, এই বিলের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে যোগী সরকার।
তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভি যোগী সরকারের এই বিলকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি উত্তর প্রদেশ জন্মহার নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে, তাহলে সে বিষয়কে স্বাগত।’
যোগী সরকারের এই বিলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কংগ্রেস। উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক সিংয়ের মতে, জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করা কেন্দ্রের কাজ, যোগী শুধু নির্বাচন জেতার জন্য এই বিল আনছেন। কয়েক দিন আগে সমাজবাদী পার্টির বিধান পরিষদের সদস্য ইকবাল মাহমুদ বলেছিলেন, ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ বিল মুসলিমদের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত।’
উল্লেখ্য, এর আগে অসমেও এই বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খোদ সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই নীতি প্রয়োগের জন্য সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কথা বলেছেন।