মরণোত্তর দানের অঙ্গ প্রতিস্থাপনে আবারও নজির গড়েছে কলকাতা। দুর্ঘটনায় মৃত নারীর অঙ্গে জীবন পাচ্ছে তিন মুমূর্ষু।
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক নারীর কলকাতা রুবি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে ব্রেন ডেথ হয়। চিকিৎসকরা তার স্বামীকে রোগীর অবস্থার কথা জানালে প্রাথমিক শিক্ষক স্বামী স্ত্রীর অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী গ্রহীতার সন্ধান শুরু হয়।
রক্তের গ্রুপ ও হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন (এইচএলএ) মিলিয়ে তিনজন গ্রহীতাকে বেছে নেয়া হয়। তাদের মধ্যে দুজন কিডনি পাচ্ছেন এবং একজন লিভার।
এসএসকেএম হাসপাতাল এবং চার্নক হাসপাতালে কিডনির সমস্যায় চিকিৎসাধীন দুজন পাচ্ছেন কিডনি। আরএন টেগোর হাসপাতলে লিভার সিরোসিসের জন্য চিকিৎসাধীন একজন পাচ্ছেন লিভার।
রাত ১০টার পর শুরু হয় অঙ্গ আহরণ ও সংরক্ষণের কাজ (রিট্রিভাল ও হার্ভেস্টিং)।
কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে গ্রিন করিডর করে তিনটি অঙ্গ দ্রুত পৌঁছে যায় শহরের তিনটি হাসপাতালে। শুরু হয় অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার। গভীর রাত পর্যন্ত চলে অস্ত্রোপচারের কাজ।
৩ জুলাই স্বামী প্রদীপের সঙ্গে বাইকে চেপে বিয়েবাড়ি যাচ্ছিলেন ৩৮ বছরের বিথীকা ঘোষাল। নিজের এলাকাতেই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন চন্দননগরের বিথীকা। দুর্ঘটনা বড় না হলেও মাথায় আঘাত পান ওই নারী। ওই দিন রাতে তাকে বাইপাসের ধারে রুবি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৪ জুলাই বিথীকার অস্ত্রোপচার হয়।
বহু চেষ্টা সত্ত্বেও শুক্রবার সকালে চিকিৎসকরা বোঝেন বিথীকার মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে।
বিথীকাকে আর ফিরে পাওয়া যাবে না বুঝে প্রদীপ ঘোষালের স্ত্রীর অঙ্গ দানের সিদ্ধান্তে তিনজন নবজীবনের আশা দেখছেন। আর এ নিয়ে এ বছর ষষ্ঠ মরণোত্তর অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নজির তৈরি করল কলকাতা।