গুপ্তহত্যায় প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোউসের মৃত্যুর পর দেশের নিরাপত্তা অবকাঠামো সুরক্ষিত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সামরিক সহযোগিতা চেয়েছে হাইতি।
হাইতির অন্তর্বর্তী সরকারের এ অনুরোধ আপাতত রাখছে না যুক্তরাষ্ট্র। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ‘এই মুহূর্তে’ হাইতিকে কোনো ধরনের সামরিক সহযোগিতা দেয়ার পরিকল্পনা নেই তাদের।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে প্রেসিডেন্ট হত্যায় জড়িত ২৮ বিদেশি এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে। জীবিত আটক হয়েছে ১৭ জন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘাতকচক্রের বেশির ভাগই কলম্বিয়ান আর দুইজন হাইতিয়ান-আমেরিকান। জীবিত আটকদের মধ্যে কয়েকজন কলম্বিয়ার অবসরপ্রাপ্ত সেনা। একটি বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।
বাকিদের আটক করা হয়েছে তাইওয়ানের কূটনৈতিক কার্যালয় থেকে। ১১ দুর্বৃত্ত কূটনৈতিক কার্যালয়টিতে প্রবেশ করেছিল বলে নিশ্চিত করেছে তাইপে। এদের মধ্যে তিনজন পুলিশের গুলিতে নিহত ও আটজন আটক হয়েছে।
আটক সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ইউএস ডলারের কয়েকটি বিল, নিহত প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত চেকবুক ও তার বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ-সংবলিত সার্ভার জব্দ করা হয়েছে।
এখনও অনেকের খোঁজ করছে পুলিশ। রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সজুড়ে চলছে অভিযান, বন্দুকযুদ্ধ।
এদিকে, সেনা না পাঠালেও অনুরোধে সাড়া দিয়ে হাইতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এফবিআই ও স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন। প্রেসিডেন্ট হত্যার ঘটনায় হাইতি সরকারকে সহযোগিতা করবেন তারা।
আর জাতিসংঘ থেকে হাইতিতে আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা পাঠাতে হলে এ সংক্রান্ত পরিকল্পনায় অনুমোদন দিতে হবে নিরাপত্তা পরিষদকে।
ক্যারিবীয় অঞ্চলে অবস্থিত হাইতি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দরিদ্রতম দেশ। প্রেসিডেন্ট হত্যার জেরে দেশটিতে বেসামরিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দেশজুড়ে জারি জরুরি অবস্থার মধ্যে সরকারের নেতৃত্ব কে আছেন, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।
প্রেসিডেন্টের হত্যাকারী সন্দেহে আটক কয়েকজনকে বৃহস্পতিবার অস্ত্রসহ সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত করা হয়।
কিন্তু সংঘবদ্ধ এ হত্যাকাণ্ডের হোতা কে বা কারা, কিংবা হত্যার উদ্দেশ্য কী, সেসব কিছুই জানা যায়নি।
প্রেসিডেন্ট মোউসের বাসভবনে ঢুকে বুধবার মধ্যরাতে তাকে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। ৫৩ বছর বয়সী মোউসের মৃতদেহে ১২টি গুলি বিদ্ধ হয়েছে; হত্যাকারীরা তার চোখ উপড়ে ফেলেছিল বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ৪৭ বছর বয়সী ফার্স্টলেডি মার্টিনা মোউসে গুরুতর আহত অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা স্থিতিশীল, তবে এখনও আশঙ্কাজনক।