বামশূন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা পশ্চিমবঙ্গের ২৩ বছরের মুখ্যমন্ত্রী এবং জীবদ্দশায় রাজ্য রাজনীতির ভরকেন্দ্র কমরেড জ্যোতি বসুর ১০৮তম জন্মদিন ৮ জুলাই ছিমছাম অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাম কংগ্রেস আইএসএফ জোটের একমাত্র প্রতিনিধি ভাঙ্গড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।
এ ছাড়াও শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি এবং অন্যরা।
ভারতীয় রাজনীতির উজ্জ্বল এই নক্ষত্র সম্পর্কে নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিরোধী মতকে শ্রদ্ধা করা আমাদের তার কাছ থেকে শিখতে হবে। ৩৪ বছর নিরবচ্ছিন্ন ক্ষমতায় থাকা মুখের কথা নয়। এমন একজন মানুষকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে, আমি গর্বিত। ভিন্ন রাজনীতির হলেও বিধান রায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন জ্যোতি বসু। আজ তার পথ আমাদের পাথেয় হোক।’
শুধু বামফ্রন্ট নয় এক সময় রাজ্য রাজনীতি তাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতো। এমনকি তার কাছে পরামর্শ নিতেন ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও। তার নিজের দল সিপিএম পলিটব্যুরোর বিরোধিতায় তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। যা নিয়ে জ্যোতি বসুর মন্তব্য ছিল, ‘হিস্টরিক ব্লান্ডার।’
১৯৭৭ সালে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ রায়ের পর তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০০১ সালে শারীরিক কারণে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়েন জ্যোতি বসু।
জ্যোতি বসুর আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বাদরি গ্রামে। পরে তারা কলকাতায় চলে আসেন। বাবা নিশিকান্ত বসু ছিলেন পেশায় একজন চিকিৎসক। চিকিৎসক বাবার ছেলে জ্যোতি বসু ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন যান। সেখানেই ছাত্রাবস্থায় তার কম্যুউনিস্ট আন্দোলনে হাতে খড়ি।
জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পর বাম রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল রাজ্যে সেই শূন্যতা আজও অব্যহত। তার প্রমাণ বামশূন্য পশ্চিমবঙ্গ বধানসভা।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর জন্মদিন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পালিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার জ্যোতি বসুর জন্মদিন উপলক্ষে প্রিয়া প্রেক্ষাগৃহে সিপিএম নেতা কান্তি গাঙ্গুলির লেখা একটি বই ‘রক্তপলাশের আকাঙ্ক্ষা’ প্রকাশিত হয়। এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক তরুণ মজুমদার, কমলেশ মুখোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে।