যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতা বেড়ে চলায় বিষয়টিকে জরুরি দুর্যোগ সতর্কতা হিসেবে ঘোষণা করেছে নিউইয়র্ক।
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে প্রথম অঙ্গরাজ্য হিসেবে নিউইয়র্ক এ পদক্ষেপ নিল।
স্বাধীনতা দিবস ও স্বাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে নিউইয়র্কে ৫১টি গোলাগুলির খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও সহিংসতা প্রতিরোধমূলক প্রকল্পে প্রায় ১৪ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে নিউইয়র্ক প্রশাসন।
জরুরি দুর্যোগ সতর্কতার অংশ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতাকে জনস্বাস্থ্য সংকট হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারির সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতার বেশ কয়েকটি তুলনা টেনে কুওমো বলেন, ‘পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখবেন, করোনার চেয়েও বেশি মানুষের প্রাণ যাচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্রে।
‘যেভাবে আমরা মহামারি নিয়ন্ত্রণ করেছি, ঠিক সেভাবে নিউইয়র্ক আবার জাতিকে পথ দেখাবে। আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতার বিরুদ্ধে কীভাবে লড়াই করতে হয়, কীভাবে তা ঠেকাতে হয়, দেখিয়ে দেবো আমরা।’
যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর মহামারির কেন্দ্র ছিল নিউইয়র্ক। সে অবস্থা থেকে অঙ্গরাজ্যটিকে বের করে আনার পরে প্রশংসায় ভেসেছিলেন কুওমো। যদিও পরে করোনায় বিপুলসংখ্যক প্রাণহানির খবর লুকানোর অভিযোগও ওঠে তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
এদিকে গত শুক্রবার থেকে তিন দিনে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গুলিতে প্রায় ২০০ প্রাণহানির তথ্য চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করে ইউএস গান আর্কাইভ। শুধু নিউইয়র্কেই নিহত হয় অর্ধশতাধিক মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ঘাতকরা।
চলতি বছরের মার্চে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) ২০২০ সালের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় পরের বছর দেশটিতে হত্যাকাণ্ড ছিল ২৫ শতাংশ বেশি। ২০২১ সালেও একই ধারা অব্যাহত আছে।
অপরাধবিদ রিচার্ড রোজেনফেল্ড জানান, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪টি প্রধান শহরে মাথাপিছু হত্যাকাণ্ডের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ শতাংশে।
এক বছর আগের তুলনায় অতিরিক্ত ১ হাজার ২৬৮ হত্যাকাণ্ডের ৪০ শতাংশই ঘটেছে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগোতে।
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতায় প্রাণ গেছে ২২ হাজার ৭৮৪ জনের। এর মধ্যে আত্মহত্যার সংখ্যা ১২ হাজার ৪০৮। হত্যা করা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৬ জনকে।