এশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথ সুয়েজ খালে ছয় দিন আটকে থেকে আলোচনায় এসেছিল এভার গ্রিন জাহাজ। পরে আড়াআড়ি অবস্থা থেকে সরিয়ে জলপথ মুক্ত করা হলেও ক্ষতিপূরণের দাবিতে জাহাজটিকে এতদিন আটকে রেখেছিল সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ (এসসিএ)।
অবশেষে জাহাজটিকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে একটি সমঝোতায় এসে পৌঁছেছে এসসিএ এবং জাহাজের বীমা সংস্থা ইউকে ক্লাব।
এসসিএ জানিয়েছে, সুয়েজ খালের গ্রেট বিটার লেক থেকে বুধবার ছেড়ে দেয়া হবে এভার গিভেন জাহাজটিকে।
সোমবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাহাজটি ছাড়ানোর জন্য এর আগে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার চেয়েছিল মিসর।
তবে ঠিক কত টাকায় সমঝোতা হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি কোনো পক্ষই।
তবে এসসিএর চেয়ারম্যান ওসামা রাবিইন জানিয়েছেন, সমঝোতার অংশ হিসেবে একটি জাহাজে মালামাল তোলার একটি বড় নৌকাও পাবেন তারা।
কী হয়েছিল সেদিন
প্রবল বাতাস ও ধূলিঝড়ে চারপাশ ঝাপসা হয়ে যাওয়ায় ২৩ মার্চ সকালে খালপারের সঙ্গে লেগে যায় ১ হাজার ৩০০ ফুট লম্বা ও দুই লাখ টন ওজনের জাহাজটি। ওই দিনই উদ্ধারকারী বিশেষজ্ঞ দল এনে জাহাজটিকে ভাসানোর চেষ্টা শুরু হয়। পরে ছয় দিনের চেষ্টার পরে ২৯ মার্চ জাহাজটিকে সরানো সম্ভব হয়।
এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে স্বল্পতম সময়ে যাতায়াতের পথ সুয়েজ খাল। বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ হয় ১৯৩ কিলোমিটার খালের মাধ্যমে।
সুয়েজের বিকল্প পথ দক্ষিণ আফ্রিকার ‘কেপ অফ গুড হোপ’ নামের অন্তরীপ। এ পথ দিয়ে জাহাজগুলোর গন্তব্যে পৌঁছাতে দুই সপ্তাহ বেশি সময় লাগতে পারে।
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, সুয়েজ খাল আটকে কয়েক দিন ধরে পণ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে ইউরোপের বাজারে। এর ক্ষতি সামলে উঠতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ১০ শতাংশই পরিচালিত হয় দেড়শ বছরের পুরোনো সুয়েজ খালের মাধ্যমে। ২০২০ সালে এ পথ অতিক্রম করেছে ১০০ কোটি টনের বেশি ওজনের প্রায় ১৯ হাজার জাহাজ। অর্থাৎ দিনে খালটি পার হয়েছে ৫১টির বেশি জাহাজ।