যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান স্থগিত করলেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড।
মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিয়ে চলা ১৭ বছরের বিতর্ককে এড়িয়ে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল ব্যবস্থাপনায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান চালু করেন গত বছর সেপ্টেম্বরে। এরপর তার মেয়াদের শেষ মাসেই দেশটির ফেডারেল আদালতের মাধ্যমে ১৩টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল।
নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
নির্বাচিত হয়েই তিনি নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দেন মেরিক গারল্যান্ডকে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এক আদেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ট্রাম্পের চালু করা বিধানের পুনর্বিবেচনার আদেশ দেন।
আদেশে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ট্রাম্পের সময় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তাদের অধিকাংশই বর্ণবাদী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীভুক্ত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘দণ্ডিতদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার মধ্যেই জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ নয়। সব দণ্ডপ্রাপ্তদের সঙ্গে সদাচরণ ও মানবিক ব্যবহার নিশ্চিত করাও বিভাগটির দায়িত্ব।’
জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে কোনো বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। ফেডারেল বিচারব্যবস্থায় বর্তমানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ জন। এ তথ্য জানিয়েছে নিরপেক্ষ সংস্থা ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টার।
বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বন্দির তীব্র মৃত্যুযন্ত্রণা হয়, এমন দাবির প্রেক্ষাপটে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল গারল্যান্ড জানান, এমন ওষুধ প্রয়োগে মৃত্যুর বিষয়টি আবারও পর্যালোচনা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে অধিকাংশ মৃত্যু কার্যকর করা হয় অঙ্গরাজ্যের ব্যবস্থাপনায়। দেশটির রাজ্যগুলোতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা প্রায় ২,৫০০। টেক্সাসে ১৯৭৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৫৭০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী থাকা অবস্থায় জো বাইডেন ফেডারেল ব্যবস্থায় মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরিই মধ্যে দেশটির অর্ধেক রাজ্য মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেছে।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য প্রথম রাজ্য হিসেবে চলতি বছর মার্চে বাতিল করা হয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান।