পর্যটনের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয় গন্তব্য থাইল্যান্ডে অবশেষে শুরু হলো কোয়ারেন্টিনবিহীন ভ্রমণ। এরই মধ্যে কোয়ারেন্টিনের শর্ত পূরণ ছাড়াই বিদেশি পর্যটকদের প্রথম দলকে স্বাগত জানিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি।
২৫০ জন বিদেশি পর্যটক নিয়ে চারটি বিমান স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার অবতরণ করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ফুকেট দ্বীপে।
অতিথিদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নাগরিক। বিমান তিনটি এসেছে ইসরায়েল, কাতার ও আবুধাবি থেকে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশের পর্যটনশিল্পে গতি আনতে ‘ফুকেট স্যান্ডবক্স’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে থাই সরকার।
এই প্রকল্পের আওতায় যারাই থাইল্যান্ডে পৌঁছাবেন, তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকার প্রয়োজন হবে না। তবে তাদের ফুকেটেই যেতে হবে।
বিচ্ছিন্ন দ্বীপটি থেকে চাইলে থাইল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডেও তারা যেতে পারবেন। তবে সে সুযোগ তাদের দেয়া হবে ফুকেটে পৌঁছানোর ১৪ দিন পর।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী তিন মাসে প্রায় ২৮ কোটি ডলার আয়ের প্রত্যাশা ব্যাংককের। অবশ্য তাতেও থাইল্যান্ডের মহামারিপূর্ব পর্যটনকেন্দ্রিক আয়ের ঘাটতি পূরণ হবে না।
থাইল্যান্ডের অর্থনীতির পাঁচ ভাগের এক ভাগই পর্যটননির্ভর।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালে পর্যটক না থাকায় পাঁচ হাজার কোটি ডলারের রাজস্ব হারিয়েছে থাইল্যান্ড।
এ অবস্থায় ‘ফুকেট স্যান্ডবক্স’ প্রকল্প সফল হলে দেশটির অন্য দ্বীপগুলোতেও একই ব্যবস্থা নেবে সরকার।
থাইল্যান্ডে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও ঊর্ধ্বমুখী। আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৫৭ জনের মৃত্যু ও সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ শনাক্তের খবর বৃহস্পতিবার জানিয়েছে প্রশাসন।
আর করোনার রূপ পরিবর্তিত ও অধিক সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ফুকেটে এখন পর্যন্ত দুই জনের দেহে শনাক্ত হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে থাই প্রশাসন।
বিশেষ করে ফুকেটে টিকা কার্যক্রমকে ব্যাপক অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। বিদেশি পর্যটকদের কোয়ারেন্টিনবিহীন ভ্রমণ শুরুর আগেই দ্বীপটির ৭০ শতাংশ অধিবাসীকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছিল।
কোয়ারেন্টিনে থাকতে না হলেও অবকাশ যাপনের জন্য ফুকেটগামী পর্যটকদের থাই কর্তৃপক্ষের কাছে করোনাভাইরাস পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট উপস্থাপন করতে হবে।
এ ছাড়া ফুকেটে পৌঁছানোর পর নিজ নিজ স্মার্টফোনে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে পর্যটকদের। অ্যাপটির মাধ্যমে তাদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করবে থাই প্রশাসন।
ফুকেটে থাকার ১৪ দিন পর তিনটি করোনা টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট এলে থাইল্যান্ডের মূল ভূখণ্ড ও অন্যান্য অঞ্চলে যাওয়ার অনুমতি পাবেন তারা।