বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় দাবদাহে ৫ দিনে ৫৪৯ মৃত্যু

  •    
  • ১ জুলাই, ২০২১ ০৯:৪৮

শীতল আবহাওয়ার কানাডায় শেষবার তাপমাত্রার পারদ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছিল ৮৪ বছর আগে, ১৯৩৭ সালে সাসকাচোয়ান প্রদেশে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জেনিফার ভাইনস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তারই সাক্ষী হচ্ছি আমরা। যেহেতু চলতি গ্রীষ্মে তাপমাত্রা আরও বাড়বে, এ ধরনের আরও অনেক মৃত্যু দেখতে হবে বলে ধারণা করছি।’

রেকর্ড সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় বিপর্যস্ত কানাডার পশ্চিমাঞ্চল ও যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। দেশ দুটিতে তীব্র গরমে গত শুক্রবার থেকে পাঁচ দিনে ৫৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।

কানাডায় এ সংখ্যা ৪৮৬। কেবল ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশেই এ বিপুল প্রাণহানি হয়েছে বলে বুধবার নিশ্চিত করেছে বি.সি. করোনার্স সার্ভিস। প্রদেশটির যত অস্বাভাবিক, হঠাৎ, অপ্রত্যাশিত, বেওয়ারিশ ও ব্যাখ্যা নেই এমন মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখে প্রতিষ্ঠানটি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় গত পাঁচ দিনে যে পরিমাণ প্রাণহানি হয়েছে, তা অন্য সময়ের তুলনায় প্রায় তিন গুণ।

টানা তৃতীয় দিনের মতো মঙ্গলবার এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করে কানাডা। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার শহর ভ্যানকুভার থেকে ২৫০ কিলোমিটার পূর্বের লাইটনে তাপমাত্রা সেদিন সর্বোচ্চ ১২১ দশমিক ২৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়।

শীতল আবহাওয়ার কানাডায় শেষবার তাপমাত্রার পারদ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছিল ৮৪ বছর আগে, ১৯৩৭ সালে সাসকাচোয়ান প্রদেশে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জেনিফার ভাইনস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া কতোটা ভয়াবহ হতে পারে, তারই সাক্ষী হচ্ছি আমরা। যেহেতু চলতি গ্রীষ্মে তাপমাত্রা আরও বাড়বে, এ ধরনের আরও অনেক মৃত্যু দেখতে হবে বলে ধারণা করছি।’

আবহাওয়াবিষয়ক একটি ধারণা বা পরিভাষা হলো ‘হিট ডোম’। এর অর্থ হলো, প্রখর তাপমাত্রার কারণে আবহাওয়াগত পরিবর্তন থমকে যাওয়া। এই হিট ডোমেই বিপর্যস্ত ব্রিটিশ কলাম্বিয়া।

সরকারি সংস্থা এনভায়রোনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ কানাডার জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ডেভিড ফিলিপস জানিয়েছেন, পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে হিট ডোম। ফলে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় তাপমাত্রা কিছুটা কমছে।

কিন্তু সামনের দিনগুলোতে রেকর্ড সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখতে পারে অ্যালবার্টা থেকে মানিটোবা পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চল।

কী কারণে এই হিট ডোম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন আবহাওয়াবিদরা। তবে দাবদাহের সময় ও তীব্রতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ নিশ্চিতভাবেই জলবায়ু পরিবর্তন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বুধবার দাবদাহে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি উদ্বেগ জানিয়েছেন দাবানলের শংকা নিয়ে।

অটোয়ায় দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে বারবার এমন অতিরিক্ত গরম পড়তে দেখেছি আমরা। বাস্তবতা বলছে, এই দাবদাহই শেষ নয়।’

একই পরিস্থিতি প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রেও। অসহনীয় গরম আর দীর্ঘ খরার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানিয়েছেন, এ বছর দেশটিতে রেকর্ডসংখ্যক দাবানলের আশঙ্কায় প্রস্তুত হচ্ছে প্রশাসন।

বুধবার সবচেয়ে গরম আবহাওয়া ছিল অরিগন অঙ্গরাজ্যে। সেখানে দাবদাহে গত শুক্রবার থেকে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৬৩ জনের।

এর মধ্যে পোর্টল্যান্ডেই মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের, যাদের প্রত্যেকে দেহের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার জটিলতা ‘হাইপারথার্মিয়া’য় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা।

অথচ ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অরিগনে হাইপারথার্মিয়ায় মৃতের সংখ্যা মাত্র ১২। রাজ্যজুড়ে সব হাসপাতালে গরমের কারণে স্বাস্থ্য জটিলতা নিয়ে হাজারো রোগী আসছেন কয়েক দিন ধরে, জানিয়েছে অরিগন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওয়াশিংটন ও অরিগনে রোববার থেকে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে আছে। পোর্টল্যান্ডে সেদিন সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করে, যা ছিল ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার সিয়াটলে তাপমাত্রা পৌঁছায় ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

দাবানলের আশঙ্কায় রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন অরিগন গভর্নর কেট ব্রাউন। ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে আতশবাজি নিষিদ্ধ করেছে পোর্টল্যান্ড।

এ বিভাগের আরো খবর