কলকাতার কসবায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভুয়া টিকা শিবির কাণ্ডে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে করোনার টিকা নিয়ে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন তিনি। এসময় রাজ্যের বিরুদ্ধে টিকা ঠিকমতো না দেয়ার বিরোধীদের যে অভিযোগ তার জবাবও তথ্য এবং পরিসংখ্যান দিয়ে দেন।
এরপরই কসবা ভুয়া টিকা কাণ্ডে বিজেপির হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘হিংসার ঘটনা প্রমাণ করতে ভুয়া ছবি ভাইরাল করা হচ্ছে। এই জাল টিকা কাণ্ডের পেছনে বিজেপির হাত নেই কে বলতে পারে?’
তৃণমূলের একাধিক নেতা মন্ত্রীর সঙ্গে ভুয়া টিকার হোতা দেবাঞ্জনের ছবি দেখা গেছে। এমনকি কলকাতার মেয়রের সঙ্গেও ছবিও রয়েছে তার। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আশেপাশে বহু মানুষ ঘুরে বেড়ায়। কে বা কারা আসছে সব সময় তাদের চেনা সম্ভব নয়। ছবি দিয়ে সবকিছু বিচার করা যায় না।’
এ নিয়ে তিনি এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘একবার বিমানে করে যাচ্ছিলাম। তিন নম্বর আসনে বসে ছিলাম। দেখলাম কুড়ি নম্বর আসন থেকে জুম করে আমার ছবি তুলছে। ছবি ফটোশপ করা যায়। যারা প্রতারণা করতে চায়, তারা ছবি তুলে রাখে। ভুয়া টিকা কাণ্ড একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর সঙ্গে সরকারের কোনো যোগ নেই।’
জাল টিকা কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে কলকাতার সাবেক মেয়র মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের। তার পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তায় বের হলে অনেকে ডাকেন। না শুনে চলে গেলে আবার বলবেন মেয়র কথা শুনলেন না। কথা বলার সময় কেউ ছবি তুলে রেখেছে ফিরহাদের।’
মমতার অভিযোগ, ‘শুধু বাংলা নয়, এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে একাধিক রাজ্যে। গুজরাটে বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে টিকা দেয়া হয়েছে। বিজেপির সঙ্গে অনেকের ছবি রয়েছে। সেই ছবিগুলো গেল কোথায়?
‘বাংলার থেকে ছোট ছোট রাজ্য বেশি টিকা পাচ্ছে। এ রাজ্য অনেক কম টিকা পাচ্ছে। তবুও দেশের মধ্যে করোনা টিকা দেয়ায় পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বরে। আমরা তিন কোটি টিকা চেয়েছিলাম পাইনি । টিকার অভাবে আমরা ঠিকমতো টিকা কর্মসূচি চালাতে পারছিনা। বাংলাকে এরা বদনাম করে, টিকা দেয় না।’
যাদবপুরের সাংসদ এবং অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী কসবায় দেবাঞ্জন দেবের ভুয়া টিকা শিবির থেকে টিকা নিয়েছিলেন। পরে টিকা নেয়ার রিপোর্ট না আসায় তিনি পুলিশে জানালে ভুয়া টিকার প্রতারণা চক্রটি সামনে চলে আসে।