করোনা সংক্রমণে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে। বুধবার এ কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
পরিবার পিছু কত টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং কী কী গাইডলাইন মেনে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, তা স্থির করার জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষকে ছয় সপ্তাহের সময় দিল শীর্ষ আদালত।
করোনায় যারা স্বজন হারিয়েছেন, তাদের পরিবারকে ন্যূনতম সাহায্য, যার মধ্যে আর্থিক সহায়তাও অর্ন্তভুক্ত, তা দেয়ার দায়িত্ব জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের।
কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ সেই দায়িত্ব পূরণ না করায় তুমুল সমালোচনা করে সর্বোচ্চ আদালত। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বা নিয়ম স্থির করা আদালতের দায়িত্ব নয়, এ কথাও জানায় আদালত।
বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এমআর শাহের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘করোনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারকে ন্যূনতম নিয়মবিধি মেনে আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পরিবার পিছু কত টাকা দেওয়া হবে, তা স্থির করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপরই দেয়া হচ্ছে।’
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে , ‘জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ১২ নম্বর ধারা অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে জাতীয় কর্তৃপক্ষকে ত্রাণের জন্য গাইডলাইন তৈরী করতে হবে, যাতে আর্থিক সাহায্যও সংযুক্ত থাকবে। কিন্তু আদালতে জমা দেয়া রেকর্ডে এমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি , যা থেকে বোঝা যায় ১২ নম্বর ধারা মেনে চলেছে জাতীয় কর্তৃপক্ষ’।
সম্প্রতি শীর্ষ আদালতের তরফে করোনায় মৃতদের সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ উল্লেখের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তাও ফের একবার মনে করিয়ে দেয়া হয়।
যে সমস্ত পরিবার ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে সন্তুষ্ট নয়, সেই সার্টিফিকেট সংশোধনের জন্যও দ্রুত কোনও পদ্ধতি চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে। আইনজীবী গৌরব কুমার বনসাল এবং রিপাক কানসাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০০৫ এর ১২ অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে করোনায় মৃতদের পরিবার পিছু চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। বুধবার সেই মামলার শুনানিতেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
চলতি মাসেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে প্রায় চার লাখের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতো সংখ্যক মানুষকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়।