চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ইরানের পরমাণু কেন্দ্রের ভেতরের ছবি বা তথ্য আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আর দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ।
রোববার তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। কালিবাফ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে আমাদের চুক্তি শেষ হয়েছে। ইরানের পরমাণু কেন্দ্রের কোনো তথ্য সংস্থাটিকে আর দেয়া হবে না।
‘পরমাণু কেন্দ্র-সংক্রান্ত সব ধরনের ডাটা ও ছবি এখন থেকে শুধু ইরানের অধিকারেই থাকবে।’
আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার বিষয়ে ইরানের এই সিদ্ধান্ত ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে ফেরা নিয়ে চলমান আলোচনার পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
পরমাণু সমৃদ্ধকরণ সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে চুক্তি করেছিল ইরান।
২০১৫ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় দেশটির সঙ্গে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
তিন বছর আগে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ওই চুক্তিতে ফেরার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে আলোচনা করছেন চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পরমাণু কেন্দ্র তদারকি নিয়ে ইরানের সঙ্গে তিন মাসের চুক্তি করে আইএইএ। ২৪ মে চুক্তিটি এক মাসের জন্য বাড়ানো হয়। তবে এটি আর বাড়াতে রাজি নয় ইরান।
তদারকি-সংক্রান্ত চুক্তিটি ইরান আরও বাড়াবে কি না, শুক্রবার দেশটি থেকে এ-সংক্রান্ত তাৎক্ষণিক মন্তব্য চায় আন্তর্জাতিক ওই সংস্থা।
এ বিষয়ে ইরানের দূত জানান, আইএইএকে কোনো জবাব দিতে বাধ্য নয় ইরান।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, ইরান পরমাণু কেন্দ্র তদারকি-সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে ব্যর্থ হলে তা বৃহত্তর আলোচনায় গুরুতর উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা নিয়ে আলোচনারত পক্ষগুলো সম্প্রতি জানায়, প্রধান অনেক বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইরানের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।